আনুশকার দাফন সম্পন্ন, দোষীদের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ

রাজধানীর ধানমন্ডির মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী আনুশকা নুর আমিনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ শনিবার (০৯ জানুয়ারি) সকাল ৭টায় তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া সদরের গোপালপুর গ্রামে জানাজা শেষে গোপালপুর গোরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

এর আগে সকাল ৭টা ৫ মিনিটে গোপালপুর ঈদগাহ মাঠে তার জানাজা হয়। জানাজায় আনুশকার পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী অংশ নেয়। তার দাফন শেষে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা।

কমলাপুর বাজারে সড়কের দুপাশে দাঁড়িয়ে শত শত মানুষ এই মানববন্ধনে অংশ নেয়। মানববন্ধনে স্কুলছাত্রীর বাবা, ছোটো ভাইসহ আত্মীয় স্বজনেরাও উপস্থিত ছিলেন। সবাই স্কুলছাত্রী হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এ ছাড়া মামলা ও সুরতহাল রিপোর্টে স্কুলছাত্রীর বয়স দুই বছর বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে এর প্রতিবাদ জানান তারা।

এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে তার লাশ ঢাকা থেকে কুষ্টিয়ায় গ্রামের বাড়িতে আসে। ভোর থেকেই শত শত মানুষ তাকে শেষবার দেখতে ভিড় করে। এ সময় আত্মীয়-স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর কলাবাগানের নিজ বাসা থেকে বন্ধু তানভীর ইফতেফার দিহানের বাসায় যায় সে। পরে গুরুতর অবস্থায় ওই ছাত্রীকে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন দিহান। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ গতকাল শুক্রবার বলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার করা হয়েছে। এতে তার জননাঙ্গ থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। আর ওই রক্তক্ষরণের ফলেই তার মৃত্যু হয়েছে।

এ ঘটনায় তানভীর ইফতেফার দিহানকে (১৮) একমাত্র আসামি করে কলাবাগান থানায় মামলা করেন নিহতের বাবা আল আমিন আহম্মেদ। কলাবাগান থানা পুলিশ দিহানকে গ্রেপ্তার করেছে। ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) নিউমার্কেট জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) ইহসানুল ফেরদৌস আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে বলেন, ভুক্তভোগীর সঙ্গে আসামির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আসামির মা বাসায় না থাকায় সুযোগ পেয়ে ভুক্তভোগীকে কলাবাগানের ওই ফাঁকা বাসায় ডেকে নেওয়া হয়। এরপর জোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা হয়। পরে ওই শিক্ষার্থীর জননাঙ্গ থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হয়।

এডিসি আরো বলেন, শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে ওই শিক্ষার্থী মাথা ঘুরে পড়ে যায়। এরপর তাকে চিকিৎসার জন্য আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে হাসপাতাল থেকে আমাদের বিষয়টি জানানো হয়। পরে আমরা লাশটি উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠাই।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.