যৌতুকের টাকার জন্য স্ত্রীকে মারতেন শওকত আলী ইমন

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীত পরিচালক শওকত আলী ইমন তার স্ত্রী রিদিতা রেজার কাছে যৌতুক হিসেবে দশ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করলে ইমন তাকে মারপিট করে বাসা থেকে বের করে দেন।

সম্প্রতি স্ত্রীর করা মামলায় ইমনকে অভিযুক্ত করে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করে পুলিশ। চার্জশিটে এসব কথা উল্লেখ করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রমনা থানার পুলিশের পরিদর্শক তাহমিনা রহমান। মামলাটি প্রমাণের জন্য চার্জশিটে ৯ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। আগামী রোববার (৩ জানুয়ারি) এ মামলার শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।

চার্জশিটে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, ‘আসামি শওকত আলী ইমন একজন যৌতুক লোভী ও মারমুখী লোক। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক রিদিতা রেজাকে বিবাহ করেন তিনি। বিবাহের পর থেকে আসামি ইমন তার স্ত্রী রিদিতা রেজার নিকট যৌতুক দাবি করে তাকে মারপিট ও মানসিক নির্যাতন করে আসছে বলে প্রাথমিক তদন্তে প্রকাশ পায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘তার ধারাবাহিকতায় গত ৩ জুলাই রাত সাড়ে ১১টার দিকে আসামি ইমন রমনা থানাধীন ইস্কাটন গার্ডেনের বাসায় পুনরায় রিদিতার নিকট যৌতুক হিসেবে দশ লাখ টাকা দাবি করেন। রিদিতা রেজা যৌতুক দিতে অস্বীকার করলে আসামি ইমন তাকে মারপিট করে বাসা থেকে বের করে দেন।’

এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর রিদিতা রেজা বাদী হয়ে যৌতুকের জন্য মারধরের ঘটনায় রমনা থানায় স্বামী শওকত আলী ইমনের নামে একটি মামলা করেন। পরে ২৫ সেপ্টেম্বর ইমনকে স্ত্রীর করা নারী নির্যাতন মামলায় ইস্কাটনের বাসা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরের দিন (২৬ সেপ্টেম্বর) তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এরপর ১ অক্টোবর ইমনের আইনজীবী ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম কায়সারুল ইসলাম দুই হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সংবাদ পাঠিকা রিদিতা রেজাকে বিয়ে করেন শওকত আলী ইমন। এটি ছিল তার তৃতীয় বিয়ে। প্রথম স্ত্রী অভিনেত্রী বিজরী বরকত উল্লাহর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তিনি ২০১২ সালের ৬ ডিসেম্বর তিথি কবির নামে এক নৃত্যশিল্পীকে বিয়ে করেছিলেন। তিথির সঙ্গেও তার বিচ্ছেদ হয়ে যায়। বিচ্ছেদের পর আপত্তিকর ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি ও চাঁদা দাবির অভিযোগে সাবেক স্ত্রী তিথি রমনা থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে গ্রেফতার হয়ে ইমন জেল খেটেছিলেন।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.