কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীকে ঘরে ঢুকে নির্যাতন ও সেই দৃশ্য ভিডিও করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় চার আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
জানা যায়, গত ২৬ জুন রাতে মুরাদনগরের বাহেরচর গ্রামে ২৫ বছর বয়সী এক নারীর ঘরে ঢুকে স্থানীয় এক ব্যক্তি তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। পরে এলাকাবাসী ওই ব্যক্তিকে আটক করে মারধর করে। এরই মধ্যে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে মারধরের একটি ৫১ সেকেন্ডের ভিডিও ধারণ করে কিছু ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়, যা নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
পরে এই ঘটনায় দুইটি মামলা দায়ের করা হয়—একটি ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে এবং অন্যটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে। ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ফজর আলী নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অপরদিকে, ভিডিও ধারণ ও ছড়ানোর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চার যুবক—সুমন, রমজান, আরিফ ও অনিক—কে গ্রেপ্তার করা হয়।
২৯ জুন রাতে গ্রেপ্তারকৃত চারজনকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে ৩ জুলাই আদালত চারজনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানান, রিমান্ডে এনে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার পেছনের মূল উদ্দেশ্য ও অন্যান্য জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা করা হবে।
এদিকে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশের বিভিন্ন শাখা, সিআইডি, র্যাব এবং সেনাবাহিনীর একটি পর্যবেক্ষণ দল। প্রশাসন জানায়, এই ঘটনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ ভিডিওটি, যা অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা হবে।
প্রথমে ভুক্তভোগী নারী মামলা তুলে নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও পরে তিনি মামলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
ঘটনার সামাজিক প্রভাব ও নিন্দার পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত দ্রুত তদন্ত ও বিচার কার্যক্রম নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দিয়েছে। সেই সঙ্গে ভিডিওটি যাতে অনলাইন থেকে দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অর্থসূচক/
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.