পুঁজিবাজারের স্তম্ভ মিউচ্যুয়াল ফান্ড: বিএসইসি চেয়ারম্যান

পুঁজিবাজারের স্তম্ভ মিউচ্যুয়াল ফান্ড। আমাদের বাজারে তার প্রভাব খুবই কম। আমরা জানি দেশের মিউচ্যুয়াল ফান্ডের কি অবস্থা। কিভাবে হয়েছে কাদের জন্য হয়েছে সেটাও সকলে জানি। টাস্ক ফোর্স ইতিমধ্যে এসব বিষয়ে কাজ করছে, তারা মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইস্যুতে কিছু প্রস্তাবনাও দিয়েছেন যেন ভবিষ্যতে মিউচ্যুয়াল ফান্ড বাজারের ইতিবাচিক প্রভাব বিস্তার করে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মকসুদ।

বুধবার (২৫ জুন) ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের উদ্যোগে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেটের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন আইসিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ, ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম, সিডিবিএল চেয়ারম্যান তপন চৌধুরী, এফআইসিসির সভাপতি জাভেদ আখতার। সভাপতি পরিচালনা করেন ডিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম।

এতে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা উপস্থিত ছিলেন।

রাশেদ মাকসুদ বলেন, আমরা একটা ভঙ্গুর প্রায় অর্থনীতি থেকে সামনের দিকে ঘুরে দাঁড়াচ্ছি। এই অবস্থায় যে আমাদের নীতি নির্ধারকরা এতদূর টেনে নিয়ে এসেছেন এটাই একটা মিরাকল। আমরা প্রতিনিয়ত বাজারের ব্যাপারে বসছি এবং আলোচনা করছি। বাজারের সূচক উঠানো নামানো আমাদের কাজ না। বাজারের পলিসি নিয়ে কাজ করাই আমাদের প্রধান দায়িত্ব। জনগণের কাছে আমরা সংস্কারের একটা ফুটপ্রিন্ট রেখে যেতে চাই যেন আগামী সরকার তা দেখতে পারে।

তিনি বলেন, টাস্কফোর্সের যে আরও বড় কাজটা ছিল যে সুশাসন। সেটার রিপোর্ট আমরা হাতে পেয়েছি। যদি আমরা সুশাসন নিশ্চিত করতে পারি তাহলে আরও শক্তিশালী পুঁজিবাজার উপহার দিতে পারব। ১০ কোটি টাকার ক্যাপিটালের কোম্পানি ২৮৫ কোটি টাকার ক্যাপিটাল দেখিয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীরা পথে বসে গেছে। এটা দেখার কাজ অডিটরদের। বিএসইসি ছাড়াও আরও চারটা প্রতিষ্ঠান আছে। এরমধ্যে অন্যতম। আইডিআরএ এবং এফআরসি। আইডিআরএ বেশকিছু রেগুলেশন রিভাইস করছে। কীভাবে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনতে হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আমাদের এখানে যেসব আলোচনা হয়েছে সেগুলো আমি লিখিত আকারে দিতে বলেছি। কারণ আমরা অনেক সময় শুনি শুধু কথাই আর কাজ হয় না। এজন্য সবগুলো কাজের বিষয় আমি লিখে নিয়ে সে অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা হবে। গত ১৫ বছর যে ঝঞ্জাট হয়েছে সেগুলো পরিষ্কার করা খুব দূরহ ব্যাপার। তবে দায়িত্ব যেহেতু নিয়েছি সেহেতু আমরা কাজ করছি।পুঁজিবাজারকে মেইনস্ট্রিম অর্থনীতির সাথে মেলায়নি বিগত সরকারগুলো।

আইসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, মার্কেটে কারসাজি হতে দিব না, এটি ট্রান্সপারেন্ট হবে। জনগণ এখানে অংশগ্রহণ করবে। স্টক মার্কেট এখন নড়াচড়া করছে না কারণ সুদের হার বাড়ানো হয়েছে। আমি যতদিন আইসিবিতে আছি সেখানে এক টাকাও ক্ষতি হতে দিব না। কোনো কারসাজিকারীদের সুযোগ দেব না।

ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, আমি যেদিনই ডিএসইতে কথা বলি সেদিনই দেখি ইন্ডেক্স ৩০ থেকে ৪০ পয়েন্ট নেই। তবে আজকে দেখতে পাচ্ছি ইন্ডেক্স পজিটিভ আছে। এই সময়ে সুদের হার বেশি হওয়াতে সবাই মার্কেট থেকে টাকা সরিয়ে ট্রেজারি মার্কেটে যাচ্ছে এবং বন্ড মার্কেটে যাচ্ছে। পাকিস্তানে টোটাল ট্রেডের ৩৫ শতাংশ হচ্ছে সরকারি সিকিউরিটিজ।

ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, আমাদের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে আমাদের মানসিক সান্ত্বনা দরকার। আমরা বিএসইসি চেয়ারম্যানকে আমরা সামনে দেখলেই বাজার ভালো হবে। অবশেষে আমাদের চেয়ারম্যান আমাদের সামনে এসেছে এবং বাজারও ভালো হতে শুরু করেছে। আমাদের ব্রোকারদের পক্ষ থেকে দাবি ছিল এআইটি ৫ পয়সা থেকে কমিয়ে আনা আপনি সেটা ৩ পয়সায় এনেছেন যা ১৫ বছরে কেউ আনতে পারেনি। আমাদের সিসিএ যে কমিশন ছিল সেটা নিয়ে দীর্ঘদিন ভোগান্তিতে ছিলাম সেটাও ব্রোকারদের জন্য সহজ করে দিয়েছেন।  আপনারা শুধু আমাদের পাশে থাকুন আমরা এটাই চাই।

 

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.