হুন্ডি ও অবৈধ চ্যানেল কমে আসা, বৈধ পথে ডলারের একক মূল্য এবং ব্যাংকিং খাতে প্রণোদনামূলক ব্যবস্থার কারণে প্রবাসীরা এখন নিয়মিতভাবে ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করছেন। এতে দেশের রিজার্ভের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় পৌনে ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
রোববার (২০ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের মোট রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ২১ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার। তবে বাস্তবে যে রিজার্ভ ব্যবহারযোগ্য, সেই ‘নিট রিজার্ভ’ এর হিসাব আরও ভিন্ন। আইএমএফকে জানানো হিসাবে- এসডিআর খাত, ব্যাংকগুলোর ফরেক্স ক্লিয়ারিং ব্যালেন্স এবং আকুর পাওনা বাদ দিয়ে বাংলাদেশের প্রকৃত ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।
এদিকে চলতি মাসের প্রথম ১৯ দিনেই প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে পাঠিয়েছেন ১৭১ কোটি ৮৭ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার- যার পরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। গড়ে প্রতিদিন দেশে আসছে ৯ কোটি ডলার বা প্রায় ১ হাজার ১০৪ কোটি টাকারও বেশি রেমিট্যান্স।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস থেকে ধারাবাহিকভাবে রেমিট্যান্স প্রবাহ দুই বিলিয়ন ডলারের ওপরে রয়েছে। জুলাইয়ে এসেছে ১.৯১ বিলিয়ন, আগস্টে ২.২২ বিলিয়ন, সেপ্টেম্বরে ২.৪০ বিলিয়ন, অক্টোবরে ২.৩৯ বিলিয়ন, নভেম্বরে ২.২০ বিলিয়ন, ডিসেম্বরে ২.৬৪ বিলিয়ন, জানুয়ারিতে ২.১৯ বিলিয়ন এবং ফেব্রুয়ারিতে এসেছে ২.৫৩ বিলিয়ন ডলার। ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার ও মার্চে সব রেকর্ড ভেঙে ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে আয় এসেছে ৪ দশমিক ২৫ বিলিয়ন বা ৪২৫ কোটি ডলার। গত বছরের একই মাসের চেয়ে যা ১১ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেশি। গত বছরের মার্চ মাসে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৩ দশমিক ৮১ বিলিয়ন বা ৩৮১ কোটি ডলার।
দেশের ইতিহাসে ২০২২ সালের আগস্টে রিজার্ভ উঠেছিল সর্বোচ্চ ৪৮ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলারে। সেখান থেকে প্রতি মাসে কমতে কমতে সরকার পতনের আগে গত জুলাই শেষে তা ২০ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলারে নেমেছিল। তবে সরকার পতনের পর আর রিজার্ভ থেকে কোনো ডলার বিক্রি করছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিগত সরকারের রেখে যাওয়া ৩৭০ কোটি ডলারের মেয়াদোত্তীর্ণ বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে। এসময়ে নতুন করে আর বকেয়া রাখার সুযোগ দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.