ডা. ইকবালকে অবৈধ সুবিধা দেওয়ায় প্রিমিয়ার ব্যাংককে জরিমানা

বেসরকারি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান ও উদ্যোক্তা-শেয়ারহোল্ডার ডা. এইচবিএম ইকবালকে অবৈধ সুবিধা দিয়ে ধরা খেয়েছে। ব্যাংকটি বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের (বিএফআইইউ) নির্দেশনা লংঘন করে তাকে একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করার সুযোগ দিয়েছে। এ অপরাধে ব্যাংকটিকে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা ও ৩০ হাজার ডলার (মূলত সমপরিমাণ টাকা) জরিমানা করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র অনুসারে, গত বছরের ১৬ নভেম্বর বিএফআইইউ হেফজুল বারি মোহাম্মদ ইকবাল ওরফে এইচবিএম ইকবাল, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শিল্পী, ডা. ইকবালের প্রথম স্ত্রী প্রয়াত মমতাজ বেগম পক্ষের সন্তান মঈন উদ্দিন ইকবাল, ইকরাম ইকবাল এবং নওরীন ইকবালের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্থগিত করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু এই স্থগিতাদেশ লংঘন করে ইকবালকে তার হিসাব থেকে অর্থ উত্তোলন করার সুযোগ দেয় প্রিমিয়ার ব্যাংক। ডা. ইকবাল এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ১ কোটি ১১ লাখ টাকা ও ৩০ হাজার মার্কিন ডলার উত্তোলন করেন।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এইচবিএম ইকবালকে অর্থ উত্তোলন করার সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি বিএফআইইউর নজরে এলে ব্যাংকটির কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। এমন অবস্থায় অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইনের ২৩ এর ৬ ধারা অনুযায়ী প্রিমিয়ার ব্যাংককে ১ কোটি ১১ লাখ টাকা এবং ৩০ হাজার ডলার জরিমানা করা হয়। আইনের ওই ধারায় বলা আছে, কোন হিসাব জব্দ বা স্থগিত করার পর সেটি মানতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে স্থিতির সমপরিমাণ জরিমানা করা যাবে। তাই এইচ বি এম ইকবাল জব্দ ব্যাংক হিসাব থেকে যে পরিমাণ অর্থ উত্তোলন করেছেন, প্রিমিয়ার ব্যাংককে সেই পরিমাণ অর্থ জরিমানা করা হয়েছে।

এইচবিএম ইকবাল দেশের বাইরে অবস্থান করায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবু জাফরকে ফোন করা হলেও ফোন ধরেননি।
ডা. এইচবিএম ইকবাল আওয়ামীলীগের সাবেক সংসদ সদস্য। রাজনৈতিক প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকটিকে কুক্ষিগত করে রেখেছিলেন। তিনি ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রিমিয়ার ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর তিনি পরিবার নিয়ে দুবাইয়ে পালিয়ে যান। পরিস্থিতির চাপে বাধ্য হয়ে গত জানুয়ারি মাসে তিনি ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তবে এখনো প্রিমিয়ার ব্যাংক তার কুক্ষিগতই আছে। কারণ পদত্যাগের পর তার ছেলে ইমরান ইকবালকে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে।

এইচবিএম ইকবালের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ টাকা পাচারের অভিযোগ আছে। পাচারকৃত অর্থের একাংশ দিয়ে তিনি দুবাইয়ে বড় আকারের ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে তুলেছেন।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.