শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার শঙ্কা চীনে

চীনের গুয়াংডং প্রদেশে পর পর বেশ কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত ১১ জন নিখোঁজ হলেও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

বন্যা ফলে প্রায় ৬০ হাজার মানুষকে তাদের বাড়িঘর থেকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। খবর বিবিসি।

সোমবার (২২ এপ্রিল) চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া ও অনলাইনে প্রকাশিত বিভিন্ন ফুটেজে দেখা গেছে, বন্যায় গুয়াংডংয়ের বিশাল অংশ প্লাবিত হয়ে গেছে ও উদ্ধারকারীরা কোমর-সমান পানিতে লাইফবোটে করে মানুষদের নিরাপদে নিয়ে যাচ্ছেন। বেশ কয়েকটি বড় নদীর তীরও ভেঙে গেছে।

বন্যায় সবেচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রাদেশিক রাজধানী গুয়াংজুর পাশাপাশি ছোট শহর শাওগুয়ান ও হেয়ুয়ান। অবিরাম বৃষ্টির কারণে রাজধানী শহর গুয়াংজুতে বাইয়ুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট বাতিল এবং বিলম্বিত হয়। এছাড়াও প্রদেশটির অন্তত তিনটি শহরে স্কুল বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

প্রদেশজুড়ে কয়েক ডজন বাড়িঘর ধসে পড়েছে ও গাড়ি ভেসে গেছে। সব মিলিয়ে এই বন্যায় প্রায় ১৪০.৬ মিলিয়ন ইউয়ানের (১৯.৮ মিলিয়ন ডলার) আর্থিক ক্ষতি হতে পারে অনুমান করছে প্রাদেশিক প্রশাসন।

কয়েকটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভয়াবহ বন্যা ঝুঁকির মুখে পড়েছে ১২ কোটি ৭ লাখ মানুষ। তাদের সুরক্ষায় রোববার (২১ এপ্রিল) সরকারকে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা নিতে হয়েছে।

রোববার চীনের রাষ্ট্রীয় সিসিটিভি নিউজ জানায়, পরিস্থিতি ‘ভয়াবহ’ আখ্যা দিয়ে স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শিজিয়াং এবং বেইজিয়াংয়ের নদী ও উপনদীর অববাহিকার কয়েকটি অংশে পানির স্তর এমনভাবে বেড়ে গেছে যা বিরল। ৫০ বছরে একবার এমন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

এর আগে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে বলেছিল, উত্তর গুয়াংডংয়ের একটি নদীর পানির স্তর সোমবার সকালে শতাব্দীর সবচেয়ে বেশি হতে পারে ও সেই পানি আশেপাশের অঞ্চলে বড় ধরনের আঘাত হানতে পারে। তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো বড় ঢেউ আঘাত হানার খবর পাওয়া যায়নি।

গুয়াংডংয়ের অধিকাংশ এলাকা নিম্নাঞ্চল হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিপাত কিংবা সমুদ্রের পানি বেড়ে গেলে তলিয়ে যায়, ফলে বন্যা দেখা দেয়। এছাড়া প্রদেশটি চীনের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর একটি। এখানে প্রায় ১৩ কোটি লোকের বসবাস। গুয়াংডং চীনের প্রধান রপ্তানিকেন্দ্রের পাশাপাশি অন্যতম বাণিজ্যিক ও ব্যবসায়িক কেন্দ্রও।

অর্থসূচক/ এইচএআই

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.