ঈদকে সামনে রেখে সুন্দরবনে বাড়তি সতর্কতা জারি

ঈদকে সামনে রেখে সুন্দরবনে বাড়তি সতর্কতা জারি করেছে বন বিভাগ। একই সঙ্গে সুন্দরবনে কর্মরত সব কর্মকর্তা ও বনরক্ষীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সুন্দরবনের ভেতরে দায়িত্বরত বনরক্ষীদের টহল জোরদার করতে বলা হয়েছে।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছর ঈদের সময় চোরা শিকারি চক্র সুন্দরবনে হরিণসহ বন্য প্রাণী শিকারের অপতত্পরতা চালায়। গতকাল সোমবার সুন্দরবনের বজবজা নদীর রাজিয়ার ভারানী খাল এলাকা থেকে তিনজন হরিণ শিকারিকে ৩০০ মিটার দীর্ঘ হরিণ ধরার ফাঁদসহ আটক করেন বনরক্ষীরা। ঈদের ছুটির সুযোগে এই দৌরাত্ম্য আরও বাড়ার শঙ্কা রয়েছে।

তাই এবার ঈদে সুন্দরবনে বন বিভাগে কর্মরত সব কর্মকর্তা ও বনরক্ষীদের ছুটি বাতিল করে কর্মস্থলে থেকে সার্বক্ষণিক টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই উদ্যোগ সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় ভূমিকা পালন করবে বলে দাবি করেছেন সুন্দরবন খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এ জেড এম হাছানুর রহমান।

আজ মঙ্গলবার সকালে বন কর্মকর্তা এ জেড এম হাছানুর রহমান গণমাধ্যমে বলেন, ঈদের ছুটিতে সুন্দরবনের বনরক্ষীদের অধিকাংশই বাড়িতে চলে যাওয়ায় অরক্ষিত হয়ে পড়ে সুন্দরবনের অধিকাংশ এলাকা। ফলে মৌসুমি হরিণশিকারি, বনের কাঠ লুটকারী চক্র ও বিষ প্রয়োগে মাছ নিধনকারী ও অবৈধ মধু আহরণকারীরা নিরাপদ সময় মনে করছে ঈদের ছুটির কয়েকটা দিনকে। এ জন্য এবার সুন্দরবনের সব বনরক্ষীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সেই সঙ্গে টহল জোরদার করা হয়েছে।

এ ছাড়া সুন্দরবনের সীমান্ত এলাকায় যেসব ক্যাম্প আছে, সেগুলো আরও বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই হরিণ শিকার রোধে সতর্কতা অবলম্বন করছে। যদি কোনো অপরাধ সংঘটিত হয়, তার দায়দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট স্টেশন ও টহল ফাঁড়ির কর্মীদের বহন করতে হবে। বনে অপরাধের সঙ্গে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে অন্তত ৪০ জন শিকারিকে হরিণের মাংস-চামড়াসহ আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু সুন্দরবন-সংলগ্ন কয়রা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫১২ কেজি হরিণের মাংস, একটি জবাই করা হরিণ, পাঁচটি চামড়া ও মাথা উদ্ধার করা হয়েছে। তবে বনরক্ষীরা যে পরিমাণ হরিণের মাংস উদ্ধার ও শিকারিদের আটক করেছেন, তার চেয়ে অনেক বেশি হরিণ শিকারিদের হাতে মারা গেছে বলে দাবি স্থানীয় লোকজনের।

 

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.