বাংলাদেশের সামনে শ্রীলঙ্কার বড় পুঁজি

আগের দিন ১১৯ রানে পাঁচ উইকেট করা শ্রীলঙ্কা তৃতীয় দিনের শুরু থেকেই বাংলাদেশকে চাপে রাখে। শুরুতে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা বিশ্ব ফার্নান্দোকে ফেরালেও প্রথম সেশনে আর উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেনি বাংলাদেশ। আগের ইনিংসের দুই সেঞ্চুরিয়ান ধনঞ্জয়া ডি সিলভা এবং কামিন্দু মেন্ডিস দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। তাদের ব্যাটে ভর করেই দ্বিতীয় ইনিংসে ৪১৮ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে শ্রীলঙ্কা। লিডসহ শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৫১০ রান।

বিশ্ব ফার্নান্দোকে অবশ্য দিনের শুরুর ভাগেই ফেরান খালেদ আহমেদ। দিনের তৃতীয় ওভারে খালেদের ফিফথ স্টাম্পে করা ডেলিভারিতে খোঁচা মেরে তৃতীয় স্লিপে মেহেদী হাসান মিরাজকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ২৪ বলে চার রান করা বিশ্ব। মিরাজ ক্যাচটি একটু নিচু হয়ে লুফে নেয়ায় সেটি বুঝতে সিদ্ধান্ত নিতে একটু সময় নেন আম্পায়াররা। তারপরই উইকেটে আসেন কামিন্দু মেন্ডিস। প্রথম ইনিংসে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মিলে গড়েন ২০২ রানের জুটি। যা বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে দূরে ঠেলে দেয়। তৃতীয় দিনের শুরুর সেশনেও প্রথম ইনিংসের দুই সেঞ্চুরিয়ানের ব্যাটে হতাশায় সময় কাটায় বাংলাদেশের বোলাররা।

প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা এবারও আছেন সেঞ্চুরির পথে। লঙ্কান অধিনায়ক ক্যারিয়ারের ১৪তম হাফ সেঞ্চুরি করতে ৮২ বল খেলেন ধানাঞ্জয়া। সঙ্গে সমানতালে ব্যাট চালাচ্ছেন কামিন্দু। দুজন মিলে ১২৭ বলে শতরানের জুটি পূর্ণ করেন। শতরানের জুটি গড়ার পর হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কামিন্দু। ৬৯ বলে দুই ম্যাচের ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কামিন্দু। তার হাফ সেঞ্চুরির পরই শেষ হয় তৃতীয় দিনের প্রথম সেশন। দ্বিতীয় সেশনেও দাপট অব্যাহত থাকে শ্রীলঙ্কার।

নব্বই পেরিয়ে অবশ্য জীবন পান ধনঞ্জয়া। মেহেদী হাসান মিরাজের লাফিয়ে ওঠা বলটি পেছনের পায়ে ভর দিয়ে খেলার চেষ্টায় পরাস্ত হন লঙ্কান দলপতি। বলটি গ্লাভসে নিয়েই স্টাম্প ভাঙেন লিটন দাস। স্টাম্পিংয়ের আবেদনও করেন তিনি। কিন্তু এর আগেই যে ধনাঞ্জয়ার গ্লাভস ছুঁয়ে তার হাতে গেছে বল, সেটি খেয়াল করেননি তিনি। ফলে আউটের জন্যে কেউই আবেদন করেননি। পরে রিপ্লেতে দেখা যায়, পরিষ্কারভাবে গ্লাভসে ছুঁয়ে যায় বলটি। জীবন পাওয়ার একটু পরই সেঞ্চুরি তুলে নেন ধনঞ্জয়া। ১৬৪ বলে সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। শ্রীলঙ্কার ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে এক টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি পান তিনি।

এরপর আবারও জীবন পান লঙ্কান অধিনায়ক। ৮০ ওভারে শরিফুল ইসলামের বলে সহজ ক্যাচ মিস করেন নাহিদ রানা। ১০১ রানে বেঁচে যান ধনঞ্জয়া। তবে একটু পর অবশ্য ফিরে যেতে হয় তাকে। মেহেদী হাসান মিরাজের দারুণ একটি ডেলিভারিতে পুল করতে শর্ট মিড উইকেটে জাকিরকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। যাওয়ার আগে ধনঞ্জয়া করেন ১৭৯ বলে নয়টি চার ও দুটি ছক্কায় ১০৮ রান। তার বিদায়ে ভাঙে ১৭৩ রানের সপ্তম উইকেট জুটি। এক বল পরই তিনশ রানে পৌঁছায় শ্রীলঙ্কা। ধনঞ্জয়া বিদায় নিলেও লঙ্কান ইনিংসকে এগিয়ে নিতে থাকেন কামিন্দু। প্রায় দুই বছর পর টেস্টে ফিরে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করেন তিনিও।

১৩ চারে ১৭১ বলে মাইলফলক স্পর্শ করেন ধনঞ্জয়া। শ্রীলঙ্কার সপ্তম ব্যাটার হিসেবে এক টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি পান তিনি। দেড়শ বছরের টেস্ট ইতিহাসে একই দলের দুই ব্যাটারের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করার মাত্র তৃতীয় ঘটনা এটি। তবে এর আগে কখনোই একই ম্যাচে লঙ্কান কোনও ব্যাটার দুই ইনিংসে সেঞ্চুরির দেখা পাননি।

একইসাথে বাংলাদেশের বিপক্ষেও এক টেস্টে দুই সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া সপ্তম ব্যাটসম্যান তিনি। টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৭ নম্বরে নেমে সেঞ্চুরি করেন কামিন্দু। দ্বিতীয় ইনিংসে নামেন ৮ নম্বরে। টেস্ট ইতিহাসে ৭ বা তার নিচে নেমে একই ম্যাচের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করা প্রথম ব্যাটার তিনি। সাত উইকেটে ৩৩৮ রান নিয়ে চা বিরতিতে যায় শ্রীলঙ্কা। লিড ৪৩০ রানের।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.