ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন চালু, ক্ষুব্ধ মমতা

লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার দুই/তিন দিন আগে হঠাৎ করে ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন(সিএএ/ক্যা) কার্যকর হয়েছে সোমবার। দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

এর আগে সিএএ চালুর সম্ভাবনার মধ্যে তড়িঘড়ি সংবাদ সম্মেলন করে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাংলায় কিছুতেই ‘সিএএ’ চালু করতে দেবেন না।
নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারকে টার্গেট করে তিনি বলেন, সাহস থাকলে (সিএএ) আগে করতেন। লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার দুই/তিন দিন আগে ‘সিএএ’ চালু করার প্রয়োজন হল? আসলে এটা রাজনৈতিক পরিকল্পনা বলেও মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অন্যদিকে, সিএএ’র প্রতিবাদে বিজেপিশাসিত অসমে ৩০ টি সংগঠন যৌথভাবে এর প্রতিবাদে ১২ ঘণ্টার অনশন কর্মসূচি পালন করেছে। গুয়াহাটিতে ছাত্র সংগঠন ‘আসু’র সাধারণ সম্পাদক শঙ্করজ্যোতি বরুয়া বলেন, রাজ্যবাসী ‘ক্যা’ মেনে নেয়নি। এবং ভবিষ্যতেও মেনে নেবে না। তাই ক্যা রূপায়ন করার ঘোষণার পর থেকে আন্দোলনের পথ বেছে নেওয়া হয়েছে।

যদি সরকার দমন এবং প্রলোভন নীতি নিয়ে ‘ক্যা’ চাপিয়ে দেয়, সেক্ষেত্রে মাঠে নেমে জোরালো প্রতিবাদ হবে। এর পাশাপাশি আইনি লড়াইও চলবে। ইতোমধ্যেই ‘ক্যা’র বিরোধিতায় সুপ্রিম কোর্টে ২৪৭ টি আবেদন জমা পড়েছে। যার মধ্যে অসমের রয়েছে ৫০টি। এছাড়া উত্তরপূর্বের অন্যান্য রাজ্য থেকে আরও তিনটি আবেদন জমা পড়েছে।

এদিকে, অসমের মুখ্যমন্ত্রী ‘ক্যা’ বিরোধী আন্দোলনকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘ক্যা’র বিরোধিতায় আন্দোলন করার অধিকার সকলের রয়েছে। কিন্তু কোন রাজনৈতিক দল যদি আদালতের নির্দেশ অমান্য করে তাহলে সেই দলের নিবন্ধন বাতিল হয়ে যেতে পারে। কারণ, গৌহাটি হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে বনধের ডাক দেওয়া চলবে না। তাই ‘ক্যা’ বিরোধী আন্দোলনে শামিল কোনো রাজনৈতিক দল যদি বনধের ডাল দেয় তাহলে হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করার কারণ দেখিয়ে সেই দলের নিবন্ধন বাতিল করার জন্য তিনি নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাবেন।

সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগেই ‘সিএএ’ বাস্তবায়ন করার কথা বলেন। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ওই ইস্যুতে তৎপরতার মধ্যে বিজেপিশাসিত অসমে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার ২০১৯ সালে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ/ক্যা তৈরি করেছে। কিন্তু এতদিনেও তার বিধি তৈরি না হওয়ায় তা কার্যকর হয়নি। বিতর্কিত ওই আইনে ‘মুসলিমদের বাদ’ দিয়ে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টান শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। পার্সটুডে

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.