তুর্কি মুদ্রা সংকটে কৃষকের কাঁধে ঋণের বোঝা

সম্প্রতি তুর্কির প্রতিবেশী ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে কৃষকেরা রাস্তায় নেমে ট্র্যাক্টর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে প্রতিবাদ করেছে৷ তুরস্কের কৃষকেরা এখনও রাস্তায় না নামলেও রাষ্ট্রীয় ভর্তুকি নিয়ে তারা চরম অসন্তুষ্ট ৷ তুর্কির কৃষি খাতের প্রতিনিধিরা বলছেন পোল্যান্ড, জার্মানি ও অন্যান্য দেশের তুলনায় তারা অনেক খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন৷

তুরস্কের চেম্বার অফ এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ার্সের সভাপতি বাকি রেমজি সুইচমেজ বলেন, ‘ইউরোপে কৃষকদের বিক্ষোভের অন্যতম কারণ ছিল ডিজেলের জন্য ভর্তুকি কমানো৷ কিন্তু তুরস্কে ডিজেলের জন্য আলাদা কোনও কর সুবিধাই নেই৷ মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে এখন প্রায় ৭০% এর কাছাকাছি রয়েছে৷ এ মুহূর্তে শুধু আর্থিক সহায়তাই কৃষকদের জন্য যথেষ্ট নয়৷’

যদিও চলমান সংকট কাটাতে কৃষকদের সহায়তার জন্য তুর্কি কৃষি মন্ত্রণালয় ২০২৪ সালে তাদের বাজেট ৪৪.৫% বৃদ্ধি করেছে৷

তুরস্কের ‘চেম্বার অফ এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ার্সের’ এর তথ্য অনুসারে, তুরস্কে কৃষি পণ্য সরবরাহের খরচও দিন দিন বাড়ছে৷ উদাহরণস্বরূপ, কৃষিতে ব্যবহৃত ডিজেলের দাম গত বছর ৭৬% ও সারের দাম ২৫% পর্যন্ত বেড়েছে৷

তুরস্কের আর্থিক সংকট ইউরোপের বর্তমান মুদ্রাস্ফীতির সমস্যার চেয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছে৷ গত কয়েক বছরে তুর্কি লিরার মূল্য নাটকীয়ভাবে কমে গেছে৷ তুরস্কের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে তুরস্কে বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৬৪%, যা জার্মানিতে ছিল প্রায় ৫.৯%৷ ২০১৪ সালে যেখানে ১ ইউরোর বিপরীতে ২.৯৩ লিরা ছিল, বর্তমানে তা ৩৪ লিরা পর্যন্ত পৌঁছেছে৷

গত বছর কৃষকদের ৮০% ব্যাংক ঋণ বেড়েছে৷ সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কৃষকদের কাছে ব্যাংকগুলোর পাওনা ১৯ বছর আগের চেয়ে ১১৮ গুণ বেশি৷ অপরদিকে একই সময়ের মধ্যে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ তেমন বাড়েনি৷

তুরস্কের প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) এর সংসদ সদস্য ওরহান সারিবাল বলেন, ‘২০০৪ সালে কৃষি, বন ও প্রাণীসম্পদ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত ঋণের পরিমাণ রাষ্ট্রীয় প্রণোদনার চেয়ে ১.৭ গুণ বেশি৷ যা ২০২৩ সালে এসে ৯.৬ গুণ বেশি হয়েছে৷’

এ ছাড়া সরকারের কাছ থেকে কৃষকেরা পর্যাপ্ত সহায়তা পাচ্ছেন না বলেই তারা ঋণ নিতে বেসরকারি ব্যাংকের দিকে ঝুঁকছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.