চিনি কারখানার আগুনের প্রভাব বাজারে পড়বে না: এস আলম

চিনি কারখানার গুদামে অগ্নিকাণ্ডকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা সাময়িক সুবিধা নিতে পারেন। তবে আসন্ন রমজানে বাজারে চিনির সরবরাহে আগুনের প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. সাইফুল আলম।

চট্টগ্রামে এস আলম গ্রুপের চিনি কারখানায় (এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ) ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর মঙ্গলবার (৫ মার্চ) কারখানা পরিদর্শন করে শিল্পগ্রুপটির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কথা বলেন।

এদিন দুপুরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের ইছানগর এলাকায় পুড়ে যাওয়া চিনি কারখানা পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।

মো. সাইফুল আলম বলেন, আমাদের কাছে এরই মধ্যে সরবরাহ করার জন্য চিনির পর্যাপ্ত স্টক রয়েছে। যে সমস্যাটি হয়েছে তা কিছুদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। রমজানে চিনির সরবরাহ সংকটের শঙ্কা থাকলে আমরা পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আমদানি করতাম। আপাতত সেরকম কোনো সমস্যা নেই।

তিনি আরও বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দু-একদিনের জন্য কারসাজি করতে পারে। তবে এগুলো ঠিক হয়ে যাবে। আগুন নিভলেই আমরা প্রোডাকশন চালু করবো। যে মাল বানানো আছে তা দিয়ে মিনিমাম এক সপ্তাহ চলবে।

সোমবার (৪ মার্চ) দুপুরে এস আলমের ওই চিনি কারখানায় আগুন লাগে। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই চট্টগ্রামের সর্বৃবহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে চিনির দাম বাড়তে শুরু করে। ওই বাজারে মঙ্গলবার সকালে প্রতি কেজি চিনির দামে দুই-তিন টাকা বাড়তে দেখা গেছে।

সোমবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে কর্ণফুলী থানাধীন এলাকায় এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ নামের ওই চিনি কারখানায় আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কোস্টগার্ড ও বিমানবাহিনীর পর সেনাবাহিনীর একাধিক ইউনিটও যোগ দেয়। তবে গত ২৯ ঘণ্টায়ও পুরোপুরি নেভেনি আগুন।

সোমবার আগুন লাগার পর এস আলম গ্রুপের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আসন্ন রমজান ঘিরে মজুত করা এক লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত চিনির পুরোটাই আগুনে পুড়ে গেছে।

ওইদিন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক সুব্রত কুমার ভৌমিক বলেন, রমজানের জন্য এক লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত চিনি মজুত করা হয়েছিল। এই চিনি ব্রাজিল থেকে আমদানি করা হয়েছিল। আগুনের পরিস্থিতি দেখে বোঝা যাচ্ছে চিনি আর অবশিষ্ট নেই। ফলে রমজানে আমাদের পক্ষে বাজারে চিনি দেওয়া সম্ভব হবে না।

এস আলমের এ মিলে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও থাইল্যান্ড থেকে চিনির কাঁচামাল এনে দুটি প্ল্যান্টে পরিশোধন করা হয়। তার মধ্যে প্ল্যান্ট-১ এর দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা ৯০০ টন আর প্ল্যান্ট-২ এর দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার ৬০০ টন। থাইল্যান্ড ও ফ্রান্সের প্রযুক্তি এবং কারিগরি সহায়তায় এ কারখানাটি পরিচালিত হয়।

গত শুক্রবার (১ মার্চ) নগরীর বাকলিয়া এক্সেস রোডে এস আলম গ্রুপের একটি হিমাগারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর আগে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামের একটি ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪৬ জনের প্রাণহানি হয়।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.