অনিশ্চয়তার কাটাতে দুবাইয়ে ব্যবসা-সম্পদ বাড়াচ্ছেন পাকিস্তানি ব্যবসায়ীরা

পাকিস্তানে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা রয়েছে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। এতে ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের ব্যবসায়ীরা দুবাইয়ে আমদানি–রপ্তানির ব্যবসা খুলছেন। পাশাপাশি দুবাইয়ের আবাসন খাতে বিনিয়োগও বাড়িয়েছেন তারা।

এমন পরিস্থিতিতে খুব দ্রুত ইসলামাবাদে নতুন সরকার গঠন করার জন্য অনেক বিশ্লেষক পরমার্শ দিচ্ছেন। কারণ, অনিশ্চয়তা দূর করার এটিই একমাত্র পথ।

আবার অনেকে বলছেন, অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক উন্নত করতে নতুন সরকারকে রীতিমতো যুদ্ধ শুরু করতে হবে।

এর আগে ২০২২ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ট্যাক্স অবজারভেটরি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, পাকিস্তানিরা দুবাইয়ের আবাসন খাতে ১ হাজার ৬০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছেন। ফলে উপসাগরীয় ওই শহরে পাকিস্তানিরা তৃতীয় বহত্তম বিনিয়োগকারী হিসেবে উঠে আসে।

তথ্য অনুযায়ী, আবাসন খাতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ ছিল ভারতীয়দের, ২ হাজার ৯৮০ কোটি ডলার। দ্বিতীয় স্থানে ছিল ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীরা। তাদের বিনিয়োগ করা অর্থের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৪৭০ কোটি ডলার।

ওই প্রতিবেদন আরও বলা হয়, দুবাইয়ে যেসব পাকিস্তানি বাড়ি কিনেছেন, তাদের সংখ্যা ছিল ২০ হাজার। সবচেয়ে বেশি ছিল ভারতীয়রা। প্রায় ৩৫ হাজার। এরপরের অবস্থান ব্রিটিশদের। তাদের সংখ্যা ছিল ২৩ হাজার।

দুবাইয়ের আবাসনে এখন পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ১৪ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। ফলে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য এটিই এখন সবচেয়ে বড় বাজার। শেল কোম্পানিসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বিদেশিরা লন্ডনের জমিজমার বাজারে যে পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে, দুবাইয়ে করা হয় তার দ্বিগুণের বেশি।

করাচিভিত্তিক বিনিয়োগকারী আনওয়ার খাজার ব্যবসা রয়েছে দুবাইয়ে। তিনি ডন পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা আশ্চর্যের বিষয় না যে পাকিস্তানিরা দুবাইয়ের আবাসন খাতে বিনিয়োগ করছেন। তবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে যা ঘটছে, তা হলো পাকিস্তানিরা এখন সেখানে ব্যবসা–বাণিজ্য শুরু করেছেন।’

আনওয়ার খাজা আরও বলেন, ‘অনেক বড় ব্যবসায়ী পাকিস্তান থেকে তাদের ব্যবসা হয় আংশিক বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে পুরোপরি দুবাইয়ে নিয়ে গিয়েছেন। ফলে পাকিস্তান রাজস্ব ও কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’ তবে তার মতে, এ কাজ করার ক্ষেত্রে এসব ব্যবসায়ীর যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে।

এছাড়াও তিনি বলেন, অনেক বড় ব্যবসায়ীর পরিবার স্থায়ীভাবে দুবাইয়ে থাকেন। তারা সেখানে বাড়ি কিনেছেন, আর ব্যবসা করেন বিদেশের সঙ্গে। অনেক সময় এই ব্যবসায়ীরা পাকিস্তানি পণ্যের ব্যবসা পরিচালনার জন্য সে দেশকে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করেন। অন্য দেশের সঙ্গে তারা সেখান থেকেই আমদানি–রপ্তানির ব্যবসাও করেন।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.