ইসরাইলের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ভাটা, স্বীকার নেতানিয়াহুর

হামাসের সাথে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইসরাইলের স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ভাটা পড়েছে। সার্বিক এ পরিস্থিতিতে মার্কিন বাণিজ্যিক রেটিং সংস্থা মুডি দেশটির ক্রেডিট স্কোর ‘স্থিতিশীল’ থেকে ‘নেতিবাচক’-এ নামিয়েছে।

শনিবার ইসরাইল-ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা দ্যা জেরুসালেম পোস্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় হামাসের সাথে চলমান যুদ্ধের প্রভাবের কারণে মার্কিন রেটিং সংস্থা মুডি শুক্রবার ইসরাইলের ক্রেডিট রেটিং কমিয়েছে। সংস্থাটি ইসরাইলের রেটিং A1 থেকে A2-এ এক ধাপ কমিয়েছে। ইসরাইলের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ খাতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেও জানানো হয়েছে।

একটি বিবৃতিতে মুডি বলেছে যে, হামাসের সাথে চলমান সামরিক সংঘর্ষ, এর পরবর্তী এবং বিস্তৃত পরিণতি বস্তুগতভাবে ইসরাইলের জন্য রাজনৈতিক ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে। একইসাথে দেশটির নির্বাহী ও আইন প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান এবং এর আর্থিক শক্তিকে দুর্বল করে দেয় অদূর ভবিষ্যতের জন্য এটি মূল্যায়ন করার পরে মুডি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইসরাইলের আর্থিক শক্তিকে এক ধাপ নামানোর অন্যতহ আরো একটি কারণ হলো তার উত্তর সীমান্তে হিজবুল্লাহর সাথে সংঘর্ষ বৃদ্ধির ঝুঁকি। সেটা হলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। মুডিস বলছে, এই সংঘাতে হিজবুল্লাহ জড়িয়ে পড়লে ইসরায়েলের অখণ্ডতা আরও বড় ঝুঁকির মুখে পড়বে।

এদিকে এক বিবৃতিতে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মুডির প্রতিবেদনের কথা স্বীকার করে বলেছেন, ‘ইসরাইলের অর্থনীতি শক্তিশালী। রেটিং ডাউনগ্রেড অর্থনীতির সাথে সংযুক্ত নয়, এটি সম্পূর্ণভাবে এই কারণে যে- আমরা যুদ্ধের মধ্যে আছি।’

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক রেটিং এজেন্সি কখনোই ইসরাইলকে ডাউনগ্রেড করেনি। এই ডাউনগ্রেড দেশটির বিদেশে ঋণ নেয়ার ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে, যা ইসরাইলের ভবিষ্যত বৃদ্ধির পরিকল্পনাকে প্রভাবিত করবে।

গত ৭ অক্টোবরে দখলকৃত অঞ্চলে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলোর আল-আকসা তুফান অভিযান শুরুর পর থেকে এবং ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর আগ্রাসী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সাফল্য সত্ত্বেও যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সব সময় দাবি করে আসছেন যে গাজার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এবং হামাসের পরাজয় না হওয়া পর্যন্ত তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুসারে, যুদ্ধ শুরুর দিকে ইসরাইলের অর্থ মন্ত্রণালয় ধারণা করেছিল, এ যুদ্ধে ব্যয় হবে ৫০ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু যুদ্ধ যত তীব্র হচ্ছে, ব্যয় বৃদ্ধির আশঙ্কাও তত বাড়ছে। অনেক অর্থনীতিবিদের হিসাব, এই ব্যয় ৪০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াতে পারে। দেশটিকে এখন মার্কিন সহায়তা ও বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া ঋণের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।

এ ছাড়া মাইক্রোসফট, আইবিএম, ইনটেল, গুগলসহ প্রায় ৫০০ বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ইসরাইলের প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করেছে। যুদ্ধ দীর্ঘ মেয়াদে চললে এই প্রতিষ্ঠানগুলো ইসরাইলে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে কি না, সেটাও তারা পুনর্বিবেচনা করতে পারে। পার্সটুডে

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.