বিদ্যুতের বকেয়া পরিশোধ করতে ৫,৬৬৫ কোটি টাকার বন্ড ইস্যু করবে সরকার

সরকারি-বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোয় প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা বিল বকেয়া। যার মধ্যে শুধু বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের (আইপিপি) বকেয়া ২৩ হাজার কোটি টাকা। সরকারের কাছে বিপুল অঙ্কের বিল বকেয়ার কারনে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ব্যাংকের কাছ থেকে নেওয়া অর্থ পরিশোধ করতে পারছে না। এতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে।

এ পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ঋণের বিপরীতে ১২ হাজার কোটি টাকার বন্ড ইস্যু করা হবে। এ বন্ডের ৫ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকার বন্ড ইস্যুতে সম্মত হয়েছে ২৪ ব্যাংক।

মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) অর্থ মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত একটি এমওইউ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকির বিপরীতে ৫ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকার বন্ড ইস্যুতে সম্মত হয়েছে দেশের ২৪ তফসিলি ব্যাংক। মঙ্গলবার এজন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে এমওইউ স্বাক্ষরও সম্পন্ন করেছে ব্যাংকগুলো।

আজ বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বন্ড ইস্যুর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেওয়া হতে পারে। এরপর আগামী ৩ থেকে ৪ কর্মদিবসের মধ্যে এই বন্ড ইস্যু করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

নানা সংকটের কারণে অনেক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঋণ ইতোমধ্যেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। এসব ঋণ খেলাপি হলে ব্যাংকগুলোকে বিপদে পড়তে হবে বলে শঙ্কা খাত সংশ্লিষ্টদের। কারণ দেশের বিদ্যুৎ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোয় ব্যাংকগুলোর বড় অংকের অর্থায়ন রয়েছে। বিশেষ বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ও ব্যাংকগুলোকে সাময়িক স্বস্তি দিতে চাইছে সরকার। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ঋণের বিপরীতে ১২ হাজার কোটি টাকার বন্ড ইস্যু করা হবে। যার অর্থের পরিমাণ কিছুটা কমতেও পারে বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, বন্ড ইস্যুর ক্ষেত্রে অর্থায়নকারী ব্যাংকগুলোর অনুকূলে বিদ্যুৎ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের বিপরীতে প্রথমে বিশেষ ট্রেজারি বন্ড ইস্যু করবে, সেই বন্ড কিনে নেবে ব্যাংকগুলো। ব্যাংকের কাছ থেকে বন্ড কেনা বাবদ সরকার যে টাকা পাবে, সেটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে পরিশোধ করবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো সে অর্থ আবার ব্যাংকগুলোকে পরিশোধ করবে। এতে ব্যাংকের মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণগুলো খেলাপি হওয়ার হাত থেকে বেচে যাবে। পাশাপাশি এর বিপরীতে সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হবে না।

ব্যাংকগুলো বন্ডের অর্থের সমপরিমাণ বিধিবদ্ধ জমার (এসএলআর) বাধ্যবাধকতাও পূরণে ব্যবহার করতে পারবে। আবার ব্যাংকগুলো এ বন্ড কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে জমা রেখে রেপোর মাধ্যমে তারল্য সুবিধাও নিতে পারবে বলেও জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

অপরদিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বকেয়া বিলের পুরো অর্থ না পেলে বন্ডের সমপরিমাণ অর্থ ব্যাংক ঋণ পরিশোধে ব্যয় করতে পারবে। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোর দায় কমে আসবে। একইসাথে খেলাপি হওয়ার হাত থেকে রেহাই পাবে।

 

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.