বাংলাদেশে অনুমতি ছাড়াই অবস্থান করছেন অনেক বিদেশি নাগরিক

বাংলাদেশে কাজ করার অনুমতি ছাড়াই অবস্থান করতে পারছেন অনেক বিদেশি নাগরিক। এক্ষেত্রে তাঁদের কোনো ধরনের বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে না। তাঁদের অনেকে বাংলাদেশে থেকে আয় করা অর্থের করও ঠিকমতো পরিশোধ করেন না।

গতকাল মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘কর্মানুমতি ছাড়া বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ’ শীর্ষক বৈঠকে এসব প্রসঙ্গ উঠে এসেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও বিদেশি নাগরিকদের একটি বড় অংশ বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। ধরা পড়লে জরিমানার অঙ্ক খুবই কম, মাত্র ৩০ হাজার টাকা। আবার অনেকে ভিসার শ্রেণি পরিবর্তন করেও বেশি দিন অবস্থানের সুযোগ নিচ্ছেন।

এ কারণে অবৈধভাবে বাংলাদেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে দৈনিক ভিত্তিতে জরিমানা আরোপের পাশাপাশি এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডার তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এ বৈঠকে। সেই সঙ্গে অবৈধভাবে বসবাসকারী বিদেশিদের যাঁরা চাকরি দেবেন, হোটেল বা বাসাভাড়া দেবেন, তাঁদেরও জরিমানার আওতায় আনার সিদ্ধান্তও হয়।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়াসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব এবং শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৭ হাজার ১৬৭ জন। চার ধরনের ভিসায় তাঁরা এ দেশে এসেছেন। এর মধ্যে ব্যবসা ও বিনিয়োগ শ্রেণির ভিসায় ১০ হাজার ৪৮৫, কর্মসংস্থান ভিসায় ১৪ হাজার ৩৯৯, শিক্ষা ভিসায় ৬ হাজার ৮২৭ এবং পর্যটন ও অন্যান্য শ্রেণির ভিসায় ৭৫ হাজার ৪৫৬ জন বিদেশি নাগরিক বাংলাদেশে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে ভারতীয় নাগরিক সবচেয়ে বেশি—৩৭ হাজার ৪৬৪ জন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চীনের নাগরিক—১১ হাজার ৪০৪ জন।

জানা যায়, বাংলাদেশে অবস্থান করে কোনো কাজ করতে চাইলে সরকারের অনুমতি নিতে হয় এবং আয়কর দিতে হয়। কিন্তু বিদ্যমান ভিসা নীতিমালাই দুর্বলতা রয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে ২০০৬ সালের ভিসা নীতি কার্যকর রয়েছে। ২০১৯ সালে নতুন ভিসা নীতিমালা করা হলেও তা কার্যকর করেনি সরকার। আবার বাংলাদেশে অবস্থানকালে বিদেশিদের ভিসার শ্রেণি পরিবর্তনের সুযোগও রয়েছে।

বৈঠকে জানানো হয়, কর্মসংস্থান, ব্যবসা ও বিনিয়োগ ভিসা এবং পর্যটক ভিসায় এসে অনেকে কাজ করলেও ভিসা নীতিমালায় অনুমতি নেওয়ার শর্তই নেই। ফলে ভিসাধারীরাও তা নেন না। অনেকে বাংলাদেশে অবস্থান করেও ভিসার মেয়াদ বাড়াচ্ছেন। এমনকি কালোতালিকাভুক্ত বিদেশিদেরও নতুন পাসপোর্ট করার সুযোগ দিচ্ছে বিদেশি দূতাবাসগুলো। বৈঠকে এসব নিয়েও আলোচনা হয়।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.