৪৩ পণ্য রপ্তানিতে মিলবে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ নগদ সহায়তা

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪৩টি পণ্য ও খাতকে রপ্তানির বিপরীতে ভর্তুকি বা নগদ সহায়তা দেওয়া হবে। গত অর্থবছরে ১ থেকে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ হারে এ নগদ সহায়তা পেয়েছিলেন রপ্তানিকারকরা। তবে এবছর জুন পর্যন্ত রপ্তানিকারকরা সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ প্রণোদনা পাবেন।

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। নির্দেশনাটি দেশের সব বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেনের অনুমোদিত ডিলারদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

নির্দেশনা অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে ৪৩টি পণ্য রপ্তানির বিপরীতে প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা পাবে। আগের বছরও এই ৪৩টি পণ্য সহায়তা পেয়েছে। এসব পণ্যের বিপরীতে দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত নগদ সহায়তার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। যেখানে আগের বছরে রপ্তানিকারকরা সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পর্যন্ত সহায়তা পেতেন।

রপ্তানিকারকরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে রপ্তানিতে নগদ সহায়তা বাণিজ্য প্রসারে সহায়তা করবে। একইসঙ্গে প্রণোদনা ডলার সংকট কাটাতে সহায়তা করবে। এর ফলে বৈদেশিক বাণিজ্যে স্বস্তি আসবে। এছাড়া রপ্তাতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো সংকট কটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।

পণ্যগুলোর মধ্যে কৃষিপণ্য ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য, বৈচিত্রকৃত পাট, আলু এবং হালাল মাংস রপ্তানিতে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ সহায়তা পাওয়া যাবে। এছাড়া রপ্তানিমুখী দেশীয় বস্ত্রখাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্র-ব্যাকের পরিবর্তে ৩ শতাংশ, রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক খাতের (নিট, ওভেন ও সোয়েটার) ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ৪ শতাংশ, নতুন পণ্য, নতুন বাজারে (বস্ত্র খাত) ৩ শতাংশ তবে ইউরো অঞ্চলে বস্ত্রখাতের রপ্তানিকারকদের জন্য বিদ্যমান ৩ শতাংশের অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তা ১ শতাংশ, তৈরি পোশাক খাতে বিশেষ নগদ সহায়তা দশমিক ৫০ শতাংশ, পাটজাত চূড়ান্ত দ্রব্যে ৭ শতাংশ, পাটসুতায় ৫ শতাংশ এবং চামড়াজাত দ্রব্যাদি রপ্তানিতে ১২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হবে।

অন্য পণ্যগুলোর মধ্যে হাতে তৈরি পণ্যে ৮ শতাংশ, গরু-মহিষের নারী ভুড়ি, শিং ও রগে ৮ শতাংশ, হিমায়িত চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ রপ্তানি খাতে ২ থেকে ৯ শতাংশ, হালকা প্রোকৌশল পণ্য রপ্তানিতে ১২ শতাংশ, কারখানাগুলোতে উত্পাদিত ক্রাস্ট ও ফিনিশড লেদার রপ্তানিতে ৭ শতাংশ, পেট বোতল-ফ্লেক্স রপ্তানিতে ৮ শতাংশ, পেট বোতল-ফ্লেক্স থেকে উৎপাদিত পলইয়েস্টার স্টাপল ফাইবার রপ্তানিতে ৮ শতাংশ, জাহাজ রপ্তানির বিপরীতে ৮ শতাংশ, পাটকাঠি থেকে উত্পাদিত কার্বন ও জুট পার্টিকেল বোর্ড রপ্তানিতে ১০ শতাংশ, শস্য ও শাক সবজির বীজ রপ্তানিতে ১০ শতাংশ, ফার্নিচার রপ্তানিতে ১০ শতাংশ, প্লাস্টিক দ্রব্য রপ্তানিতে ৮ শতাংশ,  দেশে উত্পাদিত কাগজ ও কাগজ জাতীয় দ্রব্য রপ্তানিতে ৭ শতাংশ এবং আগর ও আতর রপ্তানিতে ১০ শতাংশ প্রণোদনা পাবেন রপ্তানিকারকরা।

এছাড়া ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্যে ৮ শতাংশ, অ্যাকুমুলেটর ব্যাটারিতে ১২ শতাংশ,  সফটওয়্যার, আইটিইএস ও হার্ডওয়্যার রপ্তানিতে ৮ শতাংশ, সফটওয়্যার ও আইটিইএস সেবা রপ্তানিতে ব্যক্তি পর্যায়ের ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ৩ শতাংশ, মোটরসাইকেল রপ্তানিতে ৮ শতাংশ, রেজার ও রেজার ব্লেড রপ্তানিতে ৮ শতাংশ, সিরামিক পণ্য রপ্তানিতে ৮ শাতংশ, টুপরি রপ্তানিতে ৯ শতাংশ, কাকড়া ও কুঁচে রপ্তানিতে ৮ শতাংশ, কেমিক্যাল পণ্য (ক্লোরিন, হাইড্রোক্লোরিক এসিড, কস্টিক সোডা এবং হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড) রপ্তানিতে  ৭ শতাংশ, কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য রপ্তানিতে ৮ শতাংশ, চাল রপ্তানিতে ৫ শতাংশ, চা রপ্তানিতে ৩ শতাংশ, স্টিল রপ্তানিতে ৩ শতাংশ, বাইসাইকেল ও এর পার্টস রপ্তানিতে ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ, সিমেন্ট সিট রপ্তানিতে ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ, বেজা, বেপজা ও হাইটেক পার্ক এ অবস্থিত প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে রপ্তানিতে দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.