বিপিএল: বরিশালের টানা তৃতীয় হার

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) একটানা হেরেই চলেছে ফরচুন বরিশাল। একটানা তিন ম্যাচ হারল দলটি। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে কার্টিস ক্যাম্ফারময় ম্যাচে ১০ রানে হেরে গেল তামিম ইকবালের দল। সিলেট পর্বের দ্বিতীয় দিনের খেলায় আভিষ্কা ফার্নান্দোর অসাধারণ ইনিংসে ২০ ওভারে চার উইকেটে ১৯৩ রান করেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। আভিষ্কার পাশাপাশি এ দিন ঝড় তোলেন কার্টিস ক্যাম্ফারও। জবাবে আহমেদ শেহজাদের ঝড়ে সাত উইকেটে ১৮৩ রানে থামে দলটি। মাত্র ২০ রান খরচায় চার উইকেট নেন ক্যাম্ফার।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা দারুণ করে বরিশাল। এবারের বিপিএলে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন আহমেদ শেহজাদ। তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে মাত্র পাঁচ ওভারে ৫০ রান পেয়েছে বরিশাল। ষষ্ঠ ওভারে অবশ্য ফিরে যান তিনি। তামিম ইকবালের সাথে ৫৫ রানের জুটি গড়ে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে কার্টিস ক্যাম্ফারকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান পাকিস্তানি এই ব্যাটার। তার উইকেটটি নেন বিলাল খান।

শেহজাদের ঝড়ে পাওয়ার প্লে’তেই ৬০ রান তোলে বরিশাল। এরপর তামিম খানিকটা ধীরলয়ে ব্যাটিং করলে রান তেমন বাড়েনি বরিশালের। তবুও সৌম্য সরকারের সাথে ৩৬ রানের জুটি গড়েন তামিম। এই জুটি ভাঙেন ক্যাম্ফার। নিজের প্রথম বলেই ৩০ বলে ৩৩ রান করা তামিমকে ফেরান তিনি। তাকে লং অনে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আভিষ্কার হাতে ধরা পড়েন তামিম। দুই বল পর সৌম্যকেও বিদায় করেন ক্যাম্ফার। তার স্লোয়ার লেংথ ডেলিভারিটি ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটরক্ষক ইমরানউজ্জামানের গ্লাভসে চলে যায়। ফলে ১৬ বলে ১৭ রান করে ফিরে যান সৌম্য। দশ ওভারের পর রানরেটের চাপে পড়ে যায় বরিশাল।

নিজের পরের ওভারে আবারও জোড়া আঘাত হানেন ক্যাম্ফার। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে স্লোয়ার ডেলিভারিতে পরাস্ত করেন তিনি। ৪ বলে ৩ রান করে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দেন মাহমুদউল্লাহ। এক বল পর দলটির ক্যারিবিয়ান রিক্রুট ইয়ানিক ক্যারিয়াহকেও ফেরান ক্যাম্ফার। তাকেও স্লোয়ার ডেলিভারিতে কট এন্ড বোল্ড করে ফেরান তিনি।

এর আগে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা মনমতো হয়নি চট্টগ্রামের। তাইজুল ইসলামের করা প্রথম ওভারেই তানজিদ হাসানের উইকেট হারায় দলটি। স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে দুনিথ ওয়েলাগের কাছে তালুবন্দি হন তিনি। ফেরার আগে অবশ্য পাঁচ বলে ১২ রান করেন তিনি। পরের ওভারে তাইজুল তুলে নেন ইমরানউজ্জামানকে। ৮ বলে ৪ রান করা এই ব্যাটারকে সরাসরি বোল্ড করে বিদায় করেন তাইজুল। এরপর আভিষ্কা ফার্নান্দো এবং শাহাদাত হোসেন দিপুর ব্যাটে এগিয়ে যায় চট্টগ্রাম।

দুজনে মিলে গড়েন ৭০ রানের জুটি। এদের জুটি ভাঙেন ইয়ানিক ক্যারিয়াহ। দিপুকে বোল্ড করেন বিদায় করেন তিনি। ফেরার আগে ২৯ বলে ৩১ রান করেন শাহাদাত। দিপু ফিরলেও হাফ সেঞ্চুরি করেন আভিষ্কা। ৪০তম বলে চার মেরে হাফ সেঞ্চুরি তোলেন তিনি। হাফ সেঞ্চুরির পর আরও আগ্রাসী হয়ে যান এই শ্রীলঙ্কান। দুনিথ ওয়েলাগের একই ওভারে টানা তিন বলে একটি চার ও দুটি ছক্কা হাঁকান তিনি। নাজিবউল্লাহ জাদরানকে নিয়ে দলের রান বাড়াতে থাকেন তিনি।

দলীয় ১৯ ওভারে ফিরে যান নাজিবউল্লাহ। দুজনের ৬৮ রানের জুটি ভাঙেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। আফগান ব্যাটার নাজিবউল্লাহ ১৯ বলে ১৮ রান করে এক্সট্রা কাভারে তাইজুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন। রাব্বির পরের তিন বলে তিনটি চার হাঁকিয়ে দলের রান আরও বাড়িয়ে দেন কার্টিস ক্যাম্ফার। এই দুজনের নৈপুণ্যে শেষ পর্যন্ত দারুণ সংগ্রহ গড়ে চট্টগ্রাম। ৫০ বলে ৯১ রানে অপরাজিত থাকেন আভিষ্কা, ইনিংসে ছিল পাঁচটি চার ও সাতটি ছক্কার মার। ক্যাম্ফার করেন ৯ বলে তিনটি চার ও দুটি ছক্কায় ২৯ রান। এই বিপিএলে এটাই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ দলীয় রানের সংগ্রহ।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.