সহায়তা চাইলেন জেলেনস্কি, ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে পুতিনের সংশয়

পশ্চিমা সহায়তা নিয়ে অচলাবস্থা কাটাতে এবং পশ্চিমা বিশ্বে ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর দেশটির প্রেসিডেন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কি৷ সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনীতি ফোরামে সশরীরে উপস্থিত হয়ে তিনি মরিয়া হয়ে আরো সামরিক ও আর্থিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছেন৷ ইউক্রেনে জয়ের মুখ দেখলে রাশিয়া গোটা পশ্চিমা বিশ্বের জন্য আরো বড় হুমকি হয়ে উঠবে বলে তিনি সতর্ক করে দেন৷ ফলে নিজস্ব স্বার্থেই পশ্চিমা বিশ্বকে ইউক্রেনের জয় নিশ্চিত করা উচিত বলে জেলেনস্কি মনে করেন৷ রাশিয়ার সঙ্গে আপোশের প্রস্তাব পুরোপুরি উড়িয়ে দেন তিনি৷

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের মতে, যুদ্ধবিরতি মেনে নিলে রাশিয়া ঘর গুছিয়ে নিয়ে আবার হামলা শুরু করবে৷ ২০১৪ সালে সেই ‘ভুল’-এর কারণেই রাশিয়া আবার হামলা শুরু করেছে৷ উপস্থিত নেতারা তাঁর ভাষণকে স্বাগত জানালেও এখনো কোনো উল্লেখযোগ্য বাড়তি সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেননি৷

প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি মঙ্গলবার দাভোসে ন্যাটোর মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গের সঙ্গে আলোচনা করেন৷ জেলেনস্কি বলেন, চলতি বছরই ন্যাটো ইউক্রেনকে সদস্য করার বিষয়ে এমন কিছু সিদ্ধান্ত নেবে, যাতে সে দেশ সামরিক জোটের আরো কাছে অগ্রসর হতে পারে বলে তিনি আশা করছেন৷ তাছাড়া আকাশপথে রাশিয়ার হামলার মোকাবিলা করতে তিনি ন্যাটোর পক্ষ থেকে আরো সহায়তা চেয়েছেন৷

স্টলটেনবার্গ বলেন, ইউক্রেনের জন্য সহায়তা ন্যাটোর নিজস্ব নিরাপত্তার জন্য বিনিয়োগ৷ তাঁর মতে, ইউক্রেনের জন্য সহায়তা চালিয়ে গেলে কোনো এক সময় রাশিয়া বুঝতে পারবে, যে তাদের খুবই উচ্চ মূল্য দিতে হচ্ছে৷ তখন মস্কো কোনো ধরনের ন্যায্য শান্তি মেনে নেবে৷

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন দাভোসে তাঁর ভাষণে ইউক্রেনের জন্য আরো সহায়তার পক্ষে সওয়াল করেন৷ তিনি মনে করিয়ে দেন, পশ্চিমা বিশ্বের সহায়তা পেয়ে ইউক্রেন রাশিয়ার কবল থেকে অনেক অধিকৃত ভূখণ্ড উদ্ধার করেছে৷ তাই বর্তমানে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা চালিয়ে যাওয়া অত্যন্ত জরুরি৷ হাঙ্গেরির আপত্তি সত্ত্বেও ইইউ ইউক্রেনের জন্য সহায়তা চালিয়ে যাবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন৷

দাভোসে জেলেনস্কির জ্বালাময়ী ভাষণের কয়েক ঘণ্টা পরেই মস্কোয় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনকে সাবধান করে দিয়ে বলেন, প্রতিরোধ চালিয়ে গেলে সে দেশ ‘অপূরণীয়’ ক্ষতির মুখ দেখবে৷ রাশিয়ার সেনাবাহিনী অনেক বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে৷ ইউক্রেনের পালটা হামলাই শুধু ব্যর্থ হয়নি, রুশ বাহিনীই প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিচ্ছে৷ এমন অবস্থায় রাষ্ট্র হিসেবে ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন পুতিন৷ তিনি রাশিয়ার নিরীহ মানুষের উপর হামলার কড়া নিন্দা করেন৷

মঙ্গলবারই ইউক্রেনের উপর আরো এক দফা জোরালো হামলা চালিয়েছে রাশিয়া৷ পূবের খারকিভ শহরের কেন্দ্রস্থলে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১৭ জন নিহত হয়েছে৷ শহরের মেয়র বলেন, কাছাকাছি কোনো সামরিক স্থাপনা ছিল না৷ কৃষ্ণ সাগর উপকূলের ওডেসা শহরেও ড্রোন হামলায় কমপক্ষে তিন জন আহত হয়েছে৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ, ডিপিএ, রয়টার্স

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.