যুদ্ধের একশ দিন পরেও গাজায় হামলা চলছে

গত ৭ অক্টোবর দখলদার ইসরাইলের দখলদারি ও হত্যা-নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রশংসনীয় ও অভাবনীয় হামলা চালায় ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। সেদিন থেকেই গাজার নিরীহ ও নিরস্ত্র মানুষদের ওপর সর্বাত্মক হামলা ও গণহত্যা শুরু করে বর্ণবাদী ইসরাইল। এর পর কেটে গেছে ১০০ দিন।

এদিকে যুদ্ধের ১০০তম দিনেও গাজায় ব্যাপক হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরাইল। এই হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১২৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও ২৬৫ জন আহত হয়েছেন। এ নিয়ে গাজায় গত ১০০ দিনে মোট ২৩ হাজার ৯৬৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হলেন। মোট আহতের সংখ্যা ৬০ হাজার ৫৮২ জন। হতাহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এই সময়ে গাজার মোট ভবনের ৪৫ থেকে ৫৬ শতাংশ ধ্বংস অথবা বড় আকারে ক্ষতির শিকার হয়েছে। গাজার ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে মাত্র ১৫টি আংশিকভাবে কার্যকর রয়েছে। বাকি ২১টির কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ আছে। ব্যাপক আকারে ক্ষুধা ও অনাহারে ভুগছেন পাঁচ লাখ ৭৬ হাজার ৬০০ ফিলিস্তিনি।

গাজার ৬৯ শতাংশেরও বেশি স্কুল ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৪২টি মসজিদ ও ৩টি গির্জা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১২১টি অ্যাম্বুলেন্স ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্কুল থেকে ঝরে পড়েছে ছয় লাখ ২৫ হাজার শিক্ষার্থী।

এদিকে আল-আকসা তুফান অভিযানের প্রথম দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা সরকারের সমর্থনে এবং এমনকি তাদের প্রত্যক্ষ সহায়তায় প্রতিরোধকামী শক্তির মোকাবেলায় অসহায়ত্বের কারণে ইসরাইল তার নিজের পক্ষে ভারসাম্য পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু গাজা যুদ্ধে মার্কিন সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি সত্ত্বেও হামাস এবং আল-কাসাম ব্রিগেডসহ প্রতিরোধের সঙ্গে জড়িত সামরিক শাখাগুলোর বুদ্ধিদীপ্ত কৌশল ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর জন্য পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছিল।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, একশ দিন হয়ে গেল, এখনো হামাসের হাতে বন্দি অন্তত ১৩০ জন। এর মধ্যে ছয়জন আমেরিকান আছেন। তিনি এবং তার দল প্রতিনিয়ত এই বন্দিদের কীভাবে মুক্ত করা যায়, তার পরিকল্পনা চালিয়ে যাচ্ছেন। নিয়মিত বৈঠক করছেন। ওই বন্দিদের মুক্ত করা তার কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

বাইডেন জানিয়েছেন, গত এই একশ দিন ধরে লাগাতার বন্দিদের মুক্ত করার জন্য নানা কাজ করা হয়েছে। দ্রুত যাতে তাদের মুক্ত করা যায়, তার ব্যবস্থা হচ্ছে। একইসঙ্গে ওই বন্দিদের স্বাস্থ্যের খবর রাখা হচ্ছে সর্বদা।

এদিকে হামাস একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, তিনজন পণবন্দি প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে। তারা নিজের দেশের সরকারকে বলছেন, ইসরায়েল যেন দ্রুত তাদের অভিযান বন্ধ করে। তাহলেই একমাত্র তারা মুক্তি পাবে। সূত্র: পার্সটুডে, ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এপি, এএফপি

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.