কোম্পানি ফ্লোরে থাকলেও বড় জয় পেয়েছেন কর্তারা

নির্বাচিত হয়েছেন বেক্সিমকোর সালমান-পাপন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছেন বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমান ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন। সালমান এফ রহমান ঢাকা-১ (নবাবগঞ্জ-দোহার) এবং নাজমুল হাসান পাপন কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কিশোরগঞ্জ) আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।

তবে নির্বাচনে ব্যাপক সাফল্য দেখালেও পুঁজিবাজারে বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানিগুলোর পারফরম্যান্স অনেকটাই ম্লান। বিশেষ করে গ্রুপের প্রধান দুই কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেড ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার আটকে আছে ফ্লোর প্রাইসে। কোম্পানি দুটির শেয়ার বাজারে কেনাবেচা হয়না বললেই চলে। কোম্পানি দুটির মধ্যে বেক্সিমকো পর পর দুই প্রান্তকিকে লোকসান দিয়েছে। অন্যদিকে বেক্সিমকো ফার্মার মুনাফা আগের চেয়ে কমে গেছে।

রোববার (৭ জানুয়ারি) রাতে ঘোষিত বেসরকারি ফলাফল অনুসারে সালমান এফ রহমান এবং নাজমুল হাসান পাপন নিজ নিজ আসনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন।

বেসরকারি ফলাফল অনুসারে, নির্বাচনে বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ভোট পেয়েছেন এক লাখ ৫০ হাজার ৫টি। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সালমা ইসলাম পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৯৩০টি ভোট।

ঢাকা-১ আসনে মোট কেন্দ্র ১৮৪টি। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ১৩ হাজার ৬০৯ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫৯ হাজার ৪৪৩ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ৫৪ হাজার ১৬৩ জন।

কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বর্তমান সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

বেসরকারি ফলাফল অনুসারে, নির্বাচনে পাপন এক লাখ ৯৮ হাজার ১৫৫ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের হাজি রুবেল তিন হাজার ২০৬ ভোট পেয়েছেন। জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের নুরুল কাদের সোহেল পেয়েছেন তিন হাজার ৫৬ ও স্বতন্ত্র আব্দুস সাত্তার (ঈগল) পেয়েছেন দুই হাজার ৪৬৯ ভোট।

কিশোরগঞ্জ-৬ আসনে মোট কেন্দ্র ১৪২টি। ভোটার তিন লাখ ৯৮ হাজার ৩১৯ জন। তারমধ্যে ভৈরবে দুই লাখ ৩৯ হাজার ৫৮ জন ও কুলিয়ারচরে এক লাখ ৫৯ হাজার ২৬১ জন।

দু’বছর আগে নির্বাচনী চমকের মতোই বেক্সিমকো লিমিটেড পুঁজিবাজারে বড় চমক দেখিয়েছিল। কোম্পানিটির শেয়ারের দাম এক বছর সময়ে ১৩ টাকা থেকে বেড়ে ১৬০ টাকায় উঠেছিল। এরই মধ্যে কোম্পানিটি সুকুক বা শরীয়াহসম্মত বন্ড ইস্যু করে বাজার থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করে। তারপর থেকেই পেছনের দিকে হাঁটতে থাকে কোম্পানিটি। একদিকে শেয়ারের দাম কমতে কমতে ১১৫ টাকায় এসে ঠেকে। গত বছরের ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ফ্লোর প্রাইস আরোপ করলে কোম্পানিটির শেয়ারের দরপতন বন্ধ হয়। তখন থেকে এটি ফ্লোরেই আটকে আছে। এক সময় লেনদেনে নেতৃত্ব দেওয়া কোম্পানিটির কোনো শেয়ার বর্তমানে কেনাবেচা হয় না বললেই চলে।

এদিকে লেনদেনের পাশাপাশি বেক্সিমকোর ব্যবসায়ও লেগেছে ভাটার টান। তিন বছর আগে (২০২১) কোম্পানিটি ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ারে ২৫ টাকা আয় (ইপিএস) দেখিয়েছিল। একই কোম্পানি সর্বশেষ দুই প্রান্তিকে লোকসান দেখিয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি ৭৯ পয়সা লোকসান দিয়েছে।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.