নির্বাচনি প্রচারণা শেষ, অপেক্ষা ভোটগ্রহণের

আর একদিন পরই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন। এ ভোট উপলক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি গুছিয়ে এনেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নিয়ম অনুযায়ী, আজ শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় শেষ হয়েছে নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা।

ভোটগ্রহণ শুরু হতে অপেক্ষা আর ৪৮ ঘণ্টার। তারপর ৭ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। ভোট শেষে নির্ধারণ হবে রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে মোট এক হাজার ৯৭০ জন প্রার্থীর মধ্যে কারা হচ্ছেন সংসদ সদস্য।

এবার মোট প্রার্থীর মধ্যে রাজনৈতিক দলের এক হাজার ৫৩৪ এবং স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন ৪৩৬ জন।

ইসির তথ্য বলছে, আগামী ৭ জানুয়ারি ২৯৯ আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। কারণ, নওগাঁ-২ আসনের একজন প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে এ আসনের ভোটগ্রহণ বন্ধ করা হয়েছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, ভোটগ্রহণ শুরুর ৪৮ ঘণ্টা এবং ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্বাচনি এলাকায় কোনো জনসভা আহ্বান এবং অন্য কেউ জনসভার আয়োজন করলে, সেখানে অংশ নেওয়া যাবে না। এমনকি, মিছিল, শোভাযাত্রা বা এ ধরনের কর্মসূচি আয়োজন বা অংশগ্রহণ কোনোটিই করা যাবে না। আজ শুক্রবার সকাল ৮টায় প্রচার নির্বাচনি প্রচারের সময়সীমা শেষ হওয়ায় কোনো প্রার্থী জনসভা, পথসভা, মিছিল বা শোভাযাত্রায় অংশ নিতে পারবেন না।

এদিকে, নির্বাচন উপলক্ষে আগামী ৬ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে ৭ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত ট্যাক্সি ক্যাব, পিকআপ, মাইক্রোবাস ও ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকবে। মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ থাকবে ৫ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে ৮ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত। তবে, ইসির অনুমোদন প্রাপ্ত মোটরসাইকেল ও যান এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে। আর ভোটারদের চলাচলের সুবিধার্থে প্রাইভেটকার ও গণপরিবহণের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা শিথিল থাকবে।

এদিকে, বিএনপিসহ নিবন্ধিত ১৬টি রাজনৈতিক দল ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন ঠেকানোর আন্দোলনে রয়েছে। আর ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ইসি।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘আমাদের সব প্রস্তুতি শেষ। আমরা এখন ভোটগ্রহণের ক্ষণগণনায় রয়েছি।’

এর আগের দিন বুধবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছিলেন, ‘যেখানেই অনিয়ম, সেখানেই অ্যাকশন। প্রয়োজনে প্রার্থিতা বাতিল করা হবে। ভোটের দিনও যদি কেউ অনিয়ম করে, আমরা ভোট বন্ধ করে দেব।’

গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, প্রায় আট লাখ সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী পোলিং কালেকশনের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকবেন। তারা ভোটগ্রহণ করবেন। আরও এক লাখ স্ট্যান্ড বাই থাকবেন। ৯ লাখ আমাদের প্রস্তুত আছে। আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে সংস্থাগুলো, সব মিলিয়ে আনসার ও ভিডিপি, র‍্যাব, বিজিবি সব মিলিয়ে আট লাখ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মাঠে আছেন। মাঠে থাকবে ভোট শেষ হওয়া পর্যন্ত। এটি একটি বেশ বড় কর্মযজ্ঞ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রায় তিন হাজার ম্যাজিস্ট্রেট এবং জাজেসও মাঠে আছে ও থাকবে।

এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৩ লাখ ৩২ হাজার ৯৩৪ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ছয় কোটি পাঁচ লাখ ৯২ হাজার ১৯৭, নারী ভোটারের সংখ্যা পাঁচ কোটি ৮৭ লাখ ৩৯ হাজার ৮৮৯। এ ছাড়া সারাদেশে এবার তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন ৮৪৮ জন। এই নির্বাচনে মোট চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ২৪টি এবং চূড়ান্ত ভোটকক্ষ দুই লাখ ৬০ হাজার ৮৫৬টি।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.