অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার আল-শিফা হাসপাতালের পর এবার ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালকে ধ্বংস করার উদ্যোগ নিয়েছে ইসরাইলি সেনারা। গত ২৪ ঘণ্টা ধরে যুদ্ধবিমান থেকে ওই হাসপাতাল ও এর আশপাশে অবিরাম বোমাবর্ষণ করার পর ইসরাইলি ট্যাংকগুলো হাসপাতালটি ঘিরে ফেলেছে। এ অবস্থায় সেখানে চিকিৎসক ও চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত স্টাফসহ প্রায় ৭০০ রোগী আটকা পড়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইসরাইলি সেনারা নিরবচ্ছিন্নভাবে ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালে বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছে এবং ইসরাইলি ড্রোনগুলো হাসপাতালের আঙ্গিনায় কেউ নড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তার ওপর গুলি করছে। সোমবার থেকে হাসপাতাল থেকে কাউকে বের হতে বা প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। অথচ ইসরাইলি নিরবচ্ছিন্ন বিমান হামলায় আহত শত শত মানুষের চিকিৎসা দেয়ার জন্য হাসপাতালটি চালু রাখার ভীষণ প্রয়োজন রয়েছে।
আল-কুদরা বলেন, ইসরাইলি সেনারা ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের সঙ্গে ঠিক সেই আচরণ করছে যা তারা আল-শিফা হাপসাতালে করেছিল। তারা আল-শিফার মতো ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালে আরেকটি গণহত্যা চালাতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। খবর- পার্সটুডে
জাকার্তার আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালটি উত্তর-পূর্ব গাজার বেইত লাহিয়া শহরে অবস্থিত। সেখানে গত ২৪ ঘণ্টার ইসরাইলি হামলায় হাসপাতালে ভর্তি রোগীসহ অন্তত ১২ জন নিহত ও অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধারা হাসপাতালটিতে লুকিয়ে আছেন এই অভিযোগ তুলে সেটিকে ঘিরে ফেলেছে ইহুদিবাদী সেনারা। একই অজুহাতে তারা এর আগে আল-শিফা হাসপাতালে ধ্বংসযজ্ঞ চালালেও সেখানে কোনো প্রতিরোধ যোদ্ধাকে খুঁজে পায়নি।
আল-শিফা হাসপাতালের নীচে হামাসে প্রধান সদরদপ্তর অবস্থিত এবং সেখানে ইসরাইল থেকে ধরে আনা বহু বন্দিকে আটকে রাখা হয়েছে বলে এর আগে তেল আবিব যে দাবি করেছিল তারও সত্যতা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে দখলদার সেনারা। হামাসসহ গাজা-ভিত্তিক প্রতিরোধ যোদ্ধারা বারবার বলে এসেছেন, উপত্যকার কোনো হাসপাতালে তাদের কোনো কার্যক্রম নেই।
এদিকে, গাজার হাসপাতাল, মসজিদ, গির্জা ও স্কুলের ওপর ইসরাইলি সেনাদের বর্বরোচিত হামলার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠলেও তাতে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ করছে না তেল আবিব ও তাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ওয়াশিংটন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু’র মহাপরিচালক টেডরোস আধানোম বলেছেন, গাজার ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালে ইসরাইলি বোমাবর্ষণে তিনি ‘আতঙ্কিত’ বোধ করছেন।
এ ছাড়া গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই উপত্যকার ওপর গত ৪৫ দিনের একটানা বোমাবর্ষণে নিহতের সংখ্যা ১৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.