সহজেই রক্ত মিলবে “বাঁধন” অ্যাপে

সারা দেশে সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এমন ৭৮ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে সেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন “বাঁধন”।

গত ২০২২ সালে ৬০ হাজার ৬৯৪ ব্যাগ রক্ত সরবরাহ করেছে সংগঠনটি। গত ২৬ বছরে ১০ লাখ ৪৩ হাজার ব্যাগ রক্ত সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া এই সময়ে ২২ লাখ ৪৭ হাজার মানুষকে রক্তের গ্রুপ জানানো হয়েছে। রক্ত প্রাপ্তিকে সহজ করতে চালু করতে যাচ্ছে বাঁধন অ্যাপ। এই অ্যাপের সহজেই মিলবে চাহিদা অনুসারে রক্ত।

স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন “বাঁধন” এর ২৬ তম বর্ষপূর্তি ছিলো গত মাসের ২৪ অক্টোবর। এবারে প্রতিপাদ্য “ছাব্বিশের স্বপ্নকথা, রক্তদানেই মানবতা”। সরকারী ছুটি থাকায় স্বল্প পরিষরে আয়োজন ছিলো সেদিন। তবে ব্যাপকভাবে ২৬ বছর পুর্তি উৎসব হবে বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর)।

এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসিতে আলোচনা সভা, র‍্যালী ও সারা দেশের বাঁধন কর্মীদের মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হবে।  এছাড়া বাঁধন অ্যাপসের আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন করা হবে। উদ্ভোধন করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।

বুধবার বাঁধন কেন্দ্রীয় পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাঁধন কেন্দ্রীয় পরিষদের সভাপতি ফাহিম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. আলামিন আলী,  বাঁধন এর সাবেক কর্মীদের সংগঠন বাঁধন ফাউন্ডেশনের সাধারন সম্পাদক মীর আশাদুজ্জামান রিন্টু,  প্রচার সম্পাদক ও বাঁধন কেন্দ্রীয় পরিষদের উপদেষ্ঠা সাহানোয়ার সাইদ শাহীন।

লিখিত বক্তব্য বাঁধন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রকীব আহমেদ বলেন, ‘একের রক্ত অন্যের জীবন, রক্তই হোক আত্মার বাঁধন’ এই মূলমন্ত্রে স্বেচ্ছায় রক্তদানকে একটি সামাজিক আন্দোলনে রূপান্তরের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ২৪ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল থেকে যাত্রা শুরু করে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বাঁধন। বর্তমানে দেশের ৫৪ টি জেলায় ৭৮ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ১২ টি জোন, ১৪১ টি ইউনিট ও ৩ টি পরিবারের মাধ্যমে বাঁধন তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

রক্তদান ও রক্ত প্রাপ্তিকে আরো সহজ করতে বাঁধন উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন,  ২০২২ সালে ‘বাঁধন অ্যাপস’ উন্নয়নের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়। বাঁধনের স্বেচ্ছায় রক্তদান কার্যক্রমের ২৬ বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে রক্তদাতা ও রক্তগ্রহীতাদের নানা বিষয়কে পর্যালোচনা করে “বাঁধন অ্যাপস” তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে রক্তদাতা ও রক্তগ্রহীতা বা অনুসন্ধানকারী কম সময়ের মধ্যে কাছাকাছি স্থানে রক্তের সন্ধান পাবে।

ফলে বাংলাদেশে “বাঁধন অ্যাপস” স্বেচ্ছায় রক্তদান আন্দোলেনের জন্য নতুন একটি সংযোজন হবে। যার মাধ্যমে সহজেই যেকোনো মানুষ কাঙ্ক্ষিত রক্তদাতাকে খুজে পাওয়ার মাধ্যমে বাঁধন এর সেবা পাবে। দেশের যেকোনো জায়গা থেকে রোগীর অবস্থানের উপর ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় রক্তদাতার সন্ধান দেবে “বাঁধন” অ্যাপে। রোগীর অবস্থানের পার্শ্ববর্তী রক্তদাতাকে খুঁজতে অ্যাপসে রোগীর অবস্থান ইনপুট দিতে হবে ডিজিটাল চাহিদাপত্রে। এই অ্যাপসের মাধ্যমে রক্তদাতা ও রক্তগ্রহীতা সরাসরি নিজেদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে উপকৃত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাঁধন অ্যাপে সারাদেশের ৫৮ টি জেলা থেকে ইতোমধ্যে প্রায় ৬০ হাজার রক্তদাতার তথ্য ইনপুট দেওয়া আছে এবং প্রতিদিন এই সংখা বাড়ছে। রক্তদানে আগ্রহী এই ৬০ হাজার রক্তদাতার সবাই বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী। সারাদেশে বাঁধন’র কার্যক্রম আছে এমন ইউনিটগুলোর নবীন ছাত্রদের মধ্য থেকে নতুন রক্তদাতা এই অ্যাপে যুক্ত হতে থাকবে। এছাড়াও রক্তেদাতার খোঁজে বাঁধন অ্যাপসে যারা রেজিস্ট্রেশন করবে তারাও চাইলে রক্তদাতা হিসেবে নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে। এভাবে সুবিধাভুগীদের রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে রক্তদাতার সংখ্যা বাড়তে থাকবে। অ্যাপসটিতে রক্তদাতার তথ্যের পাশাপাশি সারাদেশের ৫৮ টি জেলার  ২০০০ টি হাসপাতালের তথ্য দেওয়া আছে।

 

অর্থসূচক/ এইচএআই

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.