ভারতের আদানি শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছিল শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘সেবি’। আদানির বিরুদ্ধে কোনো তথ্য পায়নি বলে জানিয়েছিল সংস্থাটি। সেই বিষয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, সেবি তথ্যপ্রমাণ পায় না অথচ ফিন্যান্সিয়াল টাইমস সব তথ্য হাজির করে দেয়। বিষয়টা পরিষ্কার। সরকারের সর্বোচ্চ স্তরই আদানির রক্ষাকবচ।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) দলীয় দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ব্রিটেনের ‘দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস’ পত্রিকা সম্প্রতি আদানি গোষ্ঠীর ‘দুর্নীতি’ নিয়ে এক দীর্ঘ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেই কাগজের প্রতিলিপি নিয়ে আজ বুধবার রাহুল সংবাদ সম্মেলনে আসেন।
রাহুল গান্ধী বলেন, দুর্নীতি করে দেশবাসীর হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করছে আদানি গোষ্ঠী। আর তাদের রক্ষা করছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রীর আশীর্বাদ ছাড়া আদানির এভাবে লুট সম্ভব নয়। কাগজে–কলমে চড়া দাম দেখিয়ে কয়লা আমদানি করে আদানি গোষ্ঠী দ্বিগুণ মুনাফা করেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য তারা আমদানি করেছিল ৫০০ কোটি ডলার মূল্যের কয়লা। অথচ দাম দেখিয়েছে দ্বিগুণ বেশি। সেই দরের ওপর ভিত্তি করে ঠিক হয়েছে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম, যা দিতে হচ্ছে দেশবাসীকে। এভাবে আদানি গোষ্ঠী খরচের তুলনায় ৫২ শতাংশ অতিরিক্ত লাভ করেছে।
তিনি বলেন, এই লুটের জন্য দেশবাসীকে বিদ্যুতের বাড়তি দাম দিতে হচ্ছে। আলো, পাখা, পানির পাম্প চালানোর জন্য যতবার সুইচ টিপতে হচ্ছে, প্রতিবার আদানির পকেট ভারী হচ্ছে। মনে রাখতে হবে, লুটের পরিমাণ কম নয়, ৩২ হাজার কোটি রুপি। এটা সম্ভব হচ্ছে শুধু প্রধানমন্ত্রীর কারণে। বারবার আমরা এটা নিয়ে প্রশ্ন করেছি। সংসদে করেছি। সংসদের বাইরে করেছি। এবার বিলেতের প্রতিষ্ঠিত ইংরেজি দৈনিকও তা করে দেখাল। অথচ প্রধানমন্ত্রী নীরব। কোনো তদন্ত নেই।
কংগ্রেস নেতা বলেন, আদানি ইন্দোনেশিয়ায় কয়লা কিনল। সেই কয়লা ভারতে আসার পর তার দাম দ্বিগুণ হয়ে গেল। ওভার–ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে ১২ হাজার কোটি রুপি জনগণের কাছ থেকে লুট করল তারা। বিস্ময়ের কথা, এত বড় দুর্নীতির খবরও দেশের গণমাধ্যমে স্থান পায় না। প্রধানমন্ত্রীও কোনো প্রশ্নের জবাব দেন না।
আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ইডি, রাজস্ব গোয়েন্দা দপ্তর ও শুল্ক দপ্তরের তদন্তের দাবি জানিয়ে দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে চিঠি দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সদস্য জহর সরকার। তিনি লিখেছেন, দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস তাদের প্রতিবেদনে যে অভিযোগ করেছে, তা খতিয়ে দেখতে শুল্ক বিভাগ ও রাজস্ব গোয়েন্দা দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া উচিত। ইডিকেও বলা যেতে পারে, তারা বিদেশি মুদ্রার লোকসান ও অন্যান্য আর্থিক নয়ছয়ের তদন্ত করুক।
অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস
			
						

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.