ওটিটিতে দেখা যাচ্ছে ‘সাঁতাও’

এ বছর ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সেরা ছবি হয়েছিল ‘সাঁতাও’। খন্দকার সুমন পরিচালিত ছবিটি জলবায়ু, পরিবেশ, সর্বোপরি মাতৃত্বের গল্প বলে। আলোচিত এ ছবিটি এখন দেখা যাচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বায়োস্কোপে।

অ্যাপটিতে ১৩ অক্টোবর থেকে দর্শকরা ছবিটি বিনামূল্যে দেখতে পাচ্ছেন। এর জন্য তাদেরকে শুধুমাত্র গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে বায়োস্কোপ অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে।

ওটিটিতে নিজের প্রথম ছবি মুক্তি নিয়ে সুমন বলেন, আমাদের ছবিটি সম্পূর্ণ বাংলাদেশি শিল্পী ও কলাকুশলী নিয়ে নির্মিত। শুটিংয়ের আগে পরে এ ছবিতে বিদেশি কেউ কাজ করেনি। ফলে শতভাগ দেশি ছবি এটি। এর আগে সিনেমা হল, চলচ্চিত্র উৎসবসহ বিভিন্ন করা জায়গায় করা বিকল্প প্রদর্শনীতে দর্শকরা আগ্রহ নিয়ে ছবিটি দেখেছেন। তবে অনেকেই এখনও ছবিটি দেখতে পারেননি। কারণ আমরা সবার কাছে পৌঁছাতে পারিনি বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে। ওটিটিতে আসায় এখন দেশের প্রতিটি প্রান্তের মানুষ ছবিটি দেখার সুযোগ পাবে।

খন্দকার সুমন আরও বলেন, একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা তার চলচ্চিত্রে নানান স্তরে নানান বিষয় সংহতি করে রাখেন। দর্শকগণ চলচ্চিত্রটি দেখে নিজ নিজ সামর্থ্য মত বুদ্ধিদীপ্ত চিন্তা দিয়ে তার রসাস্বাদন করেন। ‘সাঁতাও’ চলচ্চিত্রের ইমেজ পড়ে যখন কেউ এর ভিতরে স্পিরিচুয়ালিটি বা আধ্যাত্মিকতা খুঁজে পান জেনে, সত্যিই খুব আনন্দ লাগে।

‘সাঁতাও’ ভারতের ২য় ‘ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভাল কলকাতা’য় মনোনীত হয়। রাশিয়ার ১৯তম কাজান আন্তর্জাতিক মুসলিম চলচ্চিত্র উৎসবে মনোনীত হয়েছে। ২১তম ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’-এ বাংলাদেশ প্যানরমা বিভাগে সেরা চলচ্চিত্র ‘সাঁতাও’ সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছিল গত ২৭ জানুয়ারি। এরপর গত মার্চ থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় ছবিটির বিকল্প প্রদর্শনী হয়েছে।

গত বছরের নভেম্বরে ২৪ তারিখে ভারতের ‘৫৩তম ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব ইন্ডিয়া’ চলচ্চিত্র উৎসবের গোয়া প্রদেশের পাঞ্জি শহরে চলচ্চিত্রটির ‘ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার’ হয়। ইতালি ও ভারতের কলকাতায়ও ছবিটি প্রদর্শিত হয়েছে।

‘সাঁতাও’ ৩ মার্চ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি’র আয়োজনে ‘তৃতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব’ এ ‘সেরা প্রযোজনা পরিকল্পনা’ পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়। ৫ মার্চ ভারতের কেরেলা প্রদেশের ত্রিশুল শহরে অনুষ্ঠিত চলচ্চিত্র উৎসব ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব ত্রিশুল (ইন্ডিয়া) এর ১৮তম আসরে চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হয়। এর আগে ছবিটি ২৩ জানুয়ারি ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশ প্যানরমা বিভাগে সেরা চলচ্চিত্র পুরস্কার ‘ফিফরিসি অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছিল। ৬ষ্ঠ নেপাল আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ওয়ার্ল্ড প্যানরমা বিভাগে সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে ‘গৌতম বুদ্ধ অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করে। লন্ডনে অনুষ্ঠিত ২৪তম রেইনবো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি স্পেশাল মেনশন অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করে।

কৃষকের সংগ্রামী জীবন, নারীর মাতৃত্বের সর্বজনীন রূপ এবং সুরেলা জনগোষ্টির সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নায় গল্প চলচ্চিত্রের পর্দায় হাজির করেছে চলচ্চিত্র “সাঁতাও’’।

গণ-অর্থায়নে নির্মিত ‘সাঁতাও’ এর মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন আইনুন পুতুল, ফজলুল হক।

চলচ্চিত্রটির অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোঃ সালাউদ্দিন, সাবেরা ইয়াসমিন, স্বাক্ষ্য শাহীদ, শ্রাবণী দাস রিমি, তাসমিতা শিমু, মিতু সরকার, ফারুক শিয়ার চিনু, আফ্রিনা বুলবুল, রুবল লোদী, কামরুজ্জামান রাব্বী, আব্দুল আজিজ মন্ডল, বিধান রায়, জুলফিকার চঞ্চল, বিনয় প্রসাদ গুপ্ত, সুপিন বর্মণ, রেফাত হাসান সৈকত, আব্দুল্লাহ আল সেন্টু, আলমগীর কবীর বাদল, রবি দেওয়ান, দীনবন্ধু পাল, হামিদ সরকার, মোঃ হানিফ রানা, আকতার হোসেন, আজিজুল হাকিম শিউস, সাইফুল ইসলাম লিটন, রাসেল তোকদার, মজনু সরকার, আবু কালাম, সিদ্দীক আলী, সুজন মাহমুদ, তাহসিনা আকতার তন্বী, নিশাত তাহিয়াত মিমন এবং তিস্তাবাজার এলাকাবাসী।

 

অর্থসূচক/ এইচএআই

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.