যুবককে হত্যা, নোয়াখালীতে দুই ভাইয়ের যাবজ্জীবন

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নে ২০১৮ সালে কামরুল ইসলাম সাগর (২০) নামের এক যুবককে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় মিঠু চন্দ্র দাস ও জিতু চন্দ্র দাস নামের দুই ভাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে নোয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ নিলুফার সুলতানা এ রায় প্রদান করেন।

একই সঙ্গে আসামিদের উভয়কে দশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড। পৃথক একটি ধারায় তাদের আরও দশ বছরের কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, একই বাড়িতে বসবাসের সুবাদে দুঃসম্পর্কের চাচা রহমত উল্ল্যার মেয়ে মমতাজ বেগমের (১৯) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে কামরুল ইসলাম সাগরের। এ নিয়ে রহমত উল্যার পরিবারের লোকজন একাধিক বার সাগরকে মারধরের চেষ্টা করে এবং নিজের মেয়েকে সরিয়ে রাখতে চায়। কিন্তু মমতাজ বেগম পরিবারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সাগরের সঙ্গে দেখা করতো এবং তাদের ঘরে যেতো। এভাবে তাদের সম্পর্ক চলতে থাকে তিন থেকে চার বছর। বিষয়টি নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে মমতাজের বাবা রহমত উল্যা তাদের পাশ্ববর্তী মিঠু চন্দ্র দাসকে সাগরের পিছনে লেলিয়ে দেন। এরমধ্যে মিঠুর সঙ্গেও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে মমতাজের। এর সূত্রধরে মিঠু বিভিন্ন সময় সাগরকে হুমকি ধমকি দেয়।

২০১৮ সালের ৮জুন মমতাজের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে সাগরের বাড়ির পাশের সড়কে মিঠুর সঙ্গে সাগরের হাতাহাতি হয়। ওইদিন রাতে সাগরকে কৌশলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় মিঠু ও জিতু। পরে ৯জুন রাত ১টার দিকে মিঠু ও জিতু প্রথমে সাগরকে মারধর এবং পরে মিঠু সাগরের বুকের ওপর চেপে বসে এবং জিতু তাকে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে বস্তায় ঢুকিয়ে পাশ্ববর্তী একটি বাগানে ফেলে দেয়। পরদিন পুলিশ ওইস্থান থেকে বস্তাবন্ধি অবস্থায় সাগরের মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় সাগরের ভাই বাদি হয়ে মিঠু ও জিতু সহ ৮জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

মামলায় রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী পিপি গুলজর আহমেদ জুয়েল বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আসামিদের উপস্থিতিতে বিজ্ঞ বিচারক রায় প্রদান করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীত প্রমাণিত হওয়ায় আদালত দুই আসামি মিঠু ও জিতুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন।

 

অর্থসূচক/ এইচএআই

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.