ডুবে গেছে ময়মনসিংহ নগরী

এক রাতের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে ময়মনসিংহ নগরীর রাস্তাঘাট। পানি উঠেছে বাসাবাড়ি ও দোকানে। বাসায় পানি ওঠায় অনেকের রাত কেটেছে নির্ঘুম। নগরী ব্রাহ্মপল্লী এলাকায় বাসার হাঁটু পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা গেছেন পলি (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার (৬ অক্টোবর) ভোর ৫টা পর্যন্ত টানা ভারী বর্ষণ হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ময়মনসিংহ নগরীর গাঙ্গিনারপাড়, ধোপাখলা, চরপাড়া, নতুন বাজার, স্টেশন রোড, সি কে ঘোস রোড, নয়াপাড়া, ব্রাহ্মপল্লী, নওমহল, কালিবাড়ি, গুলকিবাড়ি, আমলাপাড়া, ভাটিকাশর, কালিবাড়িসহ নগরীর অনেক এলাকা হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি জমেছে। এসব এলাকার বাসাবাড়ি ও দোকানে পানি উঠেছে। অনেক পরিবার নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। নগরীর বেশকিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে।

ঢাকা থেকে ফিরছিলেন মুসান্না সাকিব নামে এক যুবক- তিনি জানান, তারা বাসা মাদ্রাসা কোয়ার্টার। তিনি রাত ৪টার সময় চরপাড়া মোড় থেকে বাসায় এসেছেন কোমর পানি পেরিয়ে।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক জাকিউল ইসলাম বলেন, হাসপাতাল চত্বরের কিছু এলাকা নিচু হওয়ায় পানি ঢুকে পড়েছে। স্টাফ কোয়ার্টারগুলোর নিচতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। গতরাতে বিদ্যুৎ না থাকায় জেনারেটর দিয়ে চিকিৎসাসেবা চালু রাখা ছিল। তবে সকাল থেকে বিকল্প বিদ্যুৎ লাইনে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা চালু আছে।

রেলওয়ের পরিবহন বিভাগের পরিদর্শক শাহীনুর ইসলাম বলেন, রেলপথ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সিগন্যাল পয়েন্ট কাজ করছে না। ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথে ট্রেন চলাচল বিঘ্ন হচ্ছে।

এদিকে, রাত ১০টার দিকে ময়মনসিংহ নগরীর কেওয়াটখালী এলাকার পাওয়ার গ্রিডের কন্ট্রোল রুমে পানি ঢুকে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা তিন ঘণ্টায় কন্ট্রোল রুমের পানি সেচে বের করেন। এ ঘটনায় বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। রাত ২টার পর আবার কন্ট্রোল রুমে পানি জমে কেওয়াটখালী পাওয়ার গ্রিড বন্ধ আছে। এতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন আছে নগরীর বেশ কিছু এলাকা।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ ফায়ার স্টেশন কর্মকর্তা জুলহাস উদ্দিন বলেন, রাত ১০টার দিকে কেওয়াটখালী পাওয়ার গ্রিড থেকে খবর আসে কন্ট্রোল রুমে পানি ঢুকেছে। এমন খবর পেয়ে তিন ঘণ্টা সেচে পানি সরানো হয়। রাতে আবারও কন্ট্রোল রুমে পানি ঢুকেছে শুনেছি।

ময়মনসিংহ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (দক্ষিণ) নির্বাহী প্রকৌশলী ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ বলেন, অতি বৃষ্টির কারণে কেওয়াটখালী পাওয়ার গ্রিড়ের কন্ট্রোল রুমে পানি ঢুকে বন্ধ আছে। এতে নগরীর স্টেশন রোড, পাদ্রী মিশন, চরপাড়াসহ বেশকিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন আছে। ঠিক হতে কত সময় লাগবে তা এখন বলা যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, বৃষ্টি কিছুটা কমায় পানিও কমতে শুরু করেছে। দ্রুত পানি সরে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে একটি টিম কাজ করছে।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.