২৫৪ রানে থামল নিউজিল্যান্ড

টসে হেরে বোলিংয়ে নেমে দুই কিউই ওপেনারের ভোগাতে থাকেন মুস্তাফিজ এবং হাসান। দারুণ সব সুইংয়ে দুজনই প্রথম দুই ওভারে কিউইদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। তৃতীয় ওভারে প্রথম উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। মুস্তাফিজের বাউন্স বলটি কাট করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের হাতে ধরা পড়েন উইল ইয়াং। আট বল খেললেও রানের খাতা খোলার আগে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি।

মুস্তাফিজ এবং হাসানদের গোছানো বোলিংয়ের পরও রান তুলতে থাকে কিউইরা। ইনিংসের সপ্তম ওভারে আবারও উইকেটের দেখা পান মুস্তাফিজ। অফসাইডের বাইরে করা তার একটি বলে ড্রাইভ দিতে গিয়ে প্রথম স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন ফিন অ্যালেন। লাফিয়ে উঠে ক্যাচটি লুফে নেন সৌম্য সরকার। ১৫ বলে ১২ রান করে অ্যালেন যখন ফিরে যান তখন কিউইদের রান ২৬। অষ্টম ওভারে বোলিং আক্রমণে আসেন খালেদ। রঙিন পোশাকের ক্যারিয়ারে নিজের করা প্রথম ওভারেই উইকেটে দেখা পান তিনি। দারুণ ছন্দে ব্যাটিং করতে থাকা চ্যাড বাওয়েসকে ফেরান তিনি। স্কয়ার লেগে তার ক্যাচটি লুফে নেন তাওহীদ হৃদয়। ফেরার আগে ১৯ বলে ১৪ রান করেন বাওয়েস।

মাত্র ৩৬ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর নিউজিল্যান্ডের হাল ধরেন হ্যানরি নিকোলস ও টম ব্লান্ডেল। শুরুতে দেখেশুনে খেললেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণাত্মক হয়েছেন দুজনই। তাদের ব্যাটে ২০.১ ওভারেই দলীয় একশো পূরণ হয় কিউইদের। ৫৪ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় গাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ব্লান্ডেল। পরের ওভারেই হাফ সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে থাকা নিকোলস অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ বলে আলগা শট খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন নিকোলস। ফলে খালেদ পেয়ে যান নিজের দ্বিতীয় শিকার। নিকোলস আউট হয়েছেন ৬১ বলে ৪৯ রান করে। এর ফলে ব্লান্ডেলের সঙ্গে তার জুটি ভেঙেছে ৯৫ রানের।

রাচিন রবীন্দ্রকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি শেখ মেহেদী। এই টাইগার স্পিনারের মিডল স্টাম্প বরাবর করা বলে ব্যাকফুট ড্রাইভ করেছিলেন রাচিন। তবে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি। ফলে বল সোজা আঘাত হানে তার পেছনের পায়ে। আম্পায়ার শুরুতে মেহেদীর আবেদনে সাড়া না দিলেও জোরালো আবেদনের পর আঙুল তোলেন তিনি। ফলে ১০ রান করেই ফিরতে হয় এই কিউই ব্যাটারকে। ব্লান্ডেলের সঙ্গে পরামর্শ করে রিভিউ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঠ ছাড়েন রাচিন। এক পাশ আগলে থাকা ব্লান্ডেলকে দারুণ এক ইয়র্কারে বোল্ড করেছেন হাসান মাহমুদ। তাতে শেষ হয়েছেন ব্লান্ডেলের ৬৮ রানের ইনিংস।

মুস্তাফিজের করা ৩৮তম ওভারের শেষ বলে মিড অফে ক্যাচ তুলেও বেঁচে গিয়েছিলেন কোল ম্যাকনকি। তার ক্যাচ সামনে ঝুঁকেও নিতে পারেননি। পরের ওভারে বল করতে এসে প্রথম বলেই এলবিডব্লিউ করে ফিরিয়েছেন এই কিউই ব্যাটারকে। নাসুমকে ব্যাকফুটে খেলতে চেয়েছিলেন ম্যাকনকি। তবে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি। রিভিউ নিয়েছিলেন তবে বাঁচতে পারেননি। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় বল সোজা আঘাত করত মিডল স্টাম্পের ওপরে থাকা বেইলে। ফলে আম্পায়ার্স কলের কারণে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে।

অষ্টম উইকেটে নিউজিল্যান্ডের রান বাড়িয়েছেন কাইল জেমিসন ও ইস সোধি। দুজনেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন। নাসুমকে লং অন দিয়ে উড়িয়ে ছক্কা মেরেছেন সোধি। পরের ওভারে মুস্তাফিজকে দুটি চার মেরেছেন জেমিসন। এই দুজনের ব্যাটে আড়াইশ পেরুনো রানের স্বপ্ন দেখে কিউইরা। এই জুটি ভেঙেছেন শেখ মেহেদী। তার ঝুলিয়ে দেয়া বলে টপ এজ হয়ে তাকেই ক্যাচ দিয়েছেন ২০ রান করা জেমিসন।

হাসান মাহমুদ ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বল থ্রো করার আগেই উইকেট থেকে খানিকটা বেরিয়ে এসেছিলেন ইস সোধি। সেই সুযোগে বল থ্রো না করেই স্টাম্প ভেঙে দেন হাসান। আম্পায়ার আউটও দিয়ে দেন। পরে অবশ্য বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস সোধিকে আবারও ব্যাটিংয়ে ফেরার আমন্ত্রণ জানান। তুলে নেন আউটের আবেদন। ইনিংসের শেষদিকে লকি ফার্গুসন ১২ বলে ১৩ রান করে কিউইদের রান বাড়াতে সহায়তা করেছেন। শেখ মেহেদীর বলে ফ্রট ফুটে এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পিং হয়েছেন ফার্গুসন। শেষদিকে ইস সোধির ক্যামিও ইনিংস ২৫৪ রানের পুঁজি পায় কিউইরা। বাংলাদেশের হয়ে ৩টি উইকেট নিয়েছেন শেখ মেহেদী, ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান ও খালেদ আহমেদ।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.