প্রত্যাশা মেটাতে পেরেছিলেন কেবল মাশরাফি। কারণ বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক সামনে থেকে পেস বোলিংকে নেতৃত্ব দিয়েছেন লম্বা সময়। দেশের ইতিহাসের সেরা পেসারও তিনিই। তবে তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি কেউই। স্পিনারদের দাপটে রুবেল হোসেন, শফিউল ইসলাম, রবিউল ইসলাম কিংবা আল আমিন হোসেনরাও আলো কাড়তে পারেননি। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পেসার ছিল না বলেই চলে। কেউ টেস্ট খেলার জন্য প্রস্তুত নয় আবার কেউ চোটের কারণে কখনই পেস ইউনিট গড়ে তোলা যায়নি।
২০১৫ বিশ্বকাপে আশা দেখিয়েছিলেন তাসকিন। এরপর ঘরের মাঠে ভারত, সাউথ আফ্রিকা সিরিজে নজর কেড়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। পেসারদের জন্য হাহাকারে থাকা বাংলাদেশের দৃশ্যপট বদলে গেছে গেল কয়েক বছরে। সেই দৃশ্যপটের মূল চরিত্র তাসকিন। যেখানে পার্শ্ব চরিত্র হয়ে আছেন হাসান মাহমুদ, ইবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদ এবং শরিফুল ইসলামরা। পাইপলাইনেও আছে বেশ কয়েকজন তরুণ পেসার।
একটা সময় ছিল বাংলাদেশের একাদশে পেসারদের তুলনায় স্পিনারদের আধিক্য বেশি ছিল। সেই সময়টা এখন অতীত। বর্তমান সময়ে পেসাররা নিজেদের এতটাই বদলে ফেলেছেন যে তাদের ছাড়া একাদশ কল্পনাই করা যায় না। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জয়, সাউথ আফ্রিকার সঙ্গে ওয়ানডে সিরিজ জয়, ঘরের মাঠে এক ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের সব উইকেট তুলে না, সবই ঘটেছে পেসারদের কল্যাণে।
তামিমের একটা লাইন দিয়ে শুরু করেছিলাম যেখানে তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন অধিনায়কের জীবন সহজ করে দিয়েছেন। সেটা কতটা সহজ করেছেন তার পরিসংখ্যানও স্পষ্ট। ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর থেকে বাংলাদেশের পেসারদের উন্নতির গ্রাফটা বেড়েই চলেছে। ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকে পেসারদের পরিসংখ্যানে ঢের এগিয়ে বাংলাদেশ।
গড়ের হিসেবে বাংলাদেশের তাসকিন, হাসান, মুস্তাফিজদের চেয়ে ভালো বোলিং করেছেন কেবল শাহীন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফরা। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর এখন পর্যন্ত ২৯ ম্যাচে ১৬৩ উইকেট নিয়েছেন পাকিস্তানের পেসাররা। আফ্রিদি-রউফরা উইকেট নিয়েছেন ২৭ গড় এবং ২৯.৩৮ স্ট্রাইক রেটে। দুইয়ে থাকা বাংলাদেশের নামটা দেখে চমকেই উঠার কথা।
এই সময়ে ৪৫ ম্যাচ খেলে তাসকিনরা নিয়েছেন ১৮৯ উইকেট। যেখানে বাংলাদেশের পেসাররা উইকেট নিয়েছেন ২৮.৩৩ গড় ও ৩১.৫৫ স্ট্রাইক রেটে। তালিকার তিনে রয়েছে নিউজিল্যান্ড। ট্রেন্ট বোল্ট, টিম সাউথ, লকি ফার্গুসনরা ৩০.০৪ গড়ে নিয়েছেন ১৯৫ উইকেট। চারে ভারত, পাঁচে অস্ট্রেলিয়া এবং ছয়ে আছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড।
শুধু পেসাররাই নয়, এই সময়ে বাংলাদেশের স্পিনাররাও সমান তালে পারফর্ম করেছেন। ৪৫ ওয়ানডেতে ২৭.২২ গড়ে ১৪৬ উইকেট নিয়েছেন সাকিব আল হাসান, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল আহমেদ, নাসুম আহমেদরা। গড়ের হিসেবে তালিকার দুইয়ে আছে রশিদ খান, মুজিব উর রহমানদের আফগানিস্তান। যেখানে ২৮.২৮ গড়ে ১০২ উইকেট নিয়েছেন তারা। তালিকার তিনে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
অর্থসূচক/এমএইচ/এএইচআর
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.