যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণে আগ্রহী এফবিসিসিআই

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য আরও জোরদার করতে চায় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রচলিত পণ্যের সাথে অপ্রচলিত পণ্য রপ্তানী বাড়াতে দেশটির সঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে শীর্ষ এই বাণিজ্য সংগঠনটি। বুধবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর জন ফে’র সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এই আগ্রহের কথা জানান এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম।

এসময় এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে আমেরিকার সাথে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক রয়েছে, এবং ক্রমেই তা আরও জোরদার হচ্ছে। দুই দেশই কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছে। করোনা মহামারির সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ভ্যাকসিন থেকে শুরু করে অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদি প্রদান করে বাংলাদেশের পাশে থেকেছে। বিগত বছরগুলোতেও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা অব্যাহত ছিল। এখন সময় এসেছে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য আরও জোরদার করার।

মাহবুবুল আলম আরও বলেন, “আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্যের মধ্যে তৈরি পোশাক, সূতা, বস্ত্র, চামড়াজাত পণ্য, কৃষি এবং হিমায়িত খাদ্য রপ্তানীর বেশিরভাগ যায় মার্কিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। যেহেতু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের একক বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য, তাই মূল্য সংযোজন ও সরবরাহ ব্যবস্থা জোরদারের মাধ্যমে যাতে উভয় দেশই লাভবান হতে পারে সেজন্য মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ)-এর উদ্যোগ নেওয়ার এখনই সময়।”

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছেন যেখানে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ, গ্যাসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে তাদের কারখানা ও শিল্পাঞ্চল স্থাপন করতে পারে। গার্মেন্টস পণ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশের আইটি, পাটপণ্য, চামড়াজাত পণ্য, মৎস্যসহ অপ্রচলিত পণ্য রপ্তানীতে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের সহায়তা চায় এফবিসিসিআই। পাশাপাশি চতুর্থ শিল্প বিল্পব মোকাবিলায় উদ্ভাবন, গবেষণা, ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা কাজে লাগাতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চান এফবিসিসিআই সভাপতি।

কমার্শিয়াল কাউন্সেলর জন ফে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অন্যতম বৃহত্তর বিনিয়োগকারী দেশ। আমেরিকাভিত্তিক অনেক কোম্পানি বাংলাদেশে সফলভাবে ব্যবসা করছে। ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদারে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও দূতাবাস একযোগে কাজ করেছে বলে জানান তিনি। এসময় বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন জন ফে।

সভায় এফবিসিসিআই ইনোভেশন এবং রিসার্চ সেন্টারের কার্যক্রমকে গতিশীল করতে এফবিসিসিআইর পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের জ্ঞান, দক্ষতা ও কারিগরি সহযোগিতা আহ্বান করা হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর সহসভাপতি খাইরুল হুদা (চপল), ড. যশোদা জীবন দেবনাথ, রাশেদুল হোসেন চৌধুরী (রনি), মুনির হোসেন, পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম, মহাসচিব মো. আলমগীর প্রমুখ।

চীনের ব্যবসায়ীদের হাই-টেক পার্ক এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের আহ্বান: এদিকে চীনের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে হাই টেক পার্ক ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে এফবিসিসিআই।

বুধবার (২৩ আগস্ট) সকালে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে চীনের ছেংদু চেম্বার অব কমার্স ফর কমার্সিয়াল সার্ভিসের সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাতে এফবিসিসিআই এর পক্ষ থেকে এই আহ্বান জানানো হয়।

পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি, বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) সহযোগিতা, বিনিয়োগ, জ্ঞান ও প্রযুক্তি বিনিময়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেয় উভয় পক্ষ।

এসময় এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি খাইরুল হুদা চপল, যশোদা জীবন দেবনাথ, মো: মুনির হোসেন, ছেংদু চেম্বার অব কমার্স ফর কমার্সিয়াল সার্ভিসের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট দোং হেজুন (Dong Hejun), বব পেং (Bob Peng), পরিচালক ঝ্যাং কে (Zhang Ke), এফবিসিসিআই’র মহাসচিব মো: আলমগীর, ইন্টারন্যাশনাল উইংসের কনসালট্যান্ট রাষ্ট্রদূত মসয়ূদ মান্নান প্রমুখ।

 

অর্থসূচক/ এইচএআই

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.