দেশের অর্থনৈতিক উত্থানে ওয়ালটনের ভূমিকা স্মরণীয়: বিএসইসি চেয়ারম্যান

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক উত্থানে ওয়ালটনের ভূমিকা স্মরণীয়৷ দেশীয় প্রযুক্তিকে বিদেশে রপ্তানির পাশাপাশি ওয়ালটন সবচেয়ে বড় যে কাজটি করছে তা হলো কর্মসংস্থান সৃষ্টি। এখন শিক্ষিত জনশক্তিকে আর দেশের বাহিরে যেতে হচ্ছে না কাজ করতে। উল্টো বাহিরের দেশ থেকে এক্সপার্টগণ বাংলাদেশে আসছেন কাজ করতে।

বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় ওয়ালটনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত তিনদিনব্যাপী ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভান্সড কম্পোনেন্টস অ্যান্ড টেকনোলজি (এটিএস) এক্সপোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শিবলী রুবাইয়াত বলেন, আমাদের জনসংখ্যা আজ পরিণত হয়েছে জনসম্পদে। অতীতে আমরা পরাধীন থাকা অবস্থায় পৃথিবীর তিনটি শিল্পবিপ্লব থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমাদের শাসনকর্তারা আমাদের কথা ভাবেনি। কিন্তু এখন আমাদের সামনে ৪র্থ শিল্পবিপ্লব। বাংলাদেশের টেকনোলজির এই মার্কেটে যদি ওয়ালটন না থাকতো তবে ফরেন আমাদের এখন প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে হতো। যেগুলা আমরা বাহির থেকে ইমপোর্ট করতাম তা এখন আমরা এক্সপোর্ট করছি। ওয়ালটন চিন্তা করছে খুব শিগগিরই তারা ১০ বিলিয়ন ডলার এক্সপোর্ট করবে তা সফল হবে।

এটিএস এক্সপো সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি বেশ কয়েক বছর আগে চায়নার হুয়াওয়ের একটি এক্সিবেশন দেখতে গিয়েছিলাম। ওয়ালটনের এই এটিএস এক্সপোতে হেটে দেখার পর আমার মনে হচ্ছে ওয়ালটন এখন সেরকম কিছু দেশে নিয়ে এসেছে। আমি চাই এটা আরও এগিয়ে যাক। আমাদের ব্যবসাবান্ধব সরকার দেশে সুন্দর একটি ব্যবসায়ীক এনভায়রনমেন্ট তৈরি করে দিয়েছে। আমি আশাকরি এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দেশের সব ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান এগিয়ে যাবে।

এ সময় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র এমডি অ্যান্ড সিইও গোলাম মুর্শেদ জানান, এটিএস এক্সপো বাংলাদেশে একক কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রথম আন্তর্জাতিক শিল্পমেলা। এতে একই ছাদের নিচে সমাহার ঘটেছে ওয়ালটনের নিজস্ব সর্বাধুনিক ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্টে তৈরি আন্তর্জাতিকমানের ৫০ হাজারেরও বেশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস কম্পোনেন্টস, সার্ভিসেস এবং টেস্টিং ফ্যাসিলিটিস। এগুলোর অধিকাংশই প্রায় সকল প্রকার শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধাপে প্রধান কাঁচামাল ও কম্পোনেন্টস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

শিল্পমেলায় মোট ২১টি স্টলে পণ্যসহ ইন্ডাস্ট্রিয়াল কম্পোনেন্টস, ম্যাটেরিয়ালস, সার্ভিসেস, টেস্টিং ল্যাব ও ফ্যাসিলিটিস প্রদর্শন করা হচ্ছে। প্রদর্শনীর পাশাপাশি এক্সপোতে ১১ আগস্ট (শুক্রবার) স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশীয় শিল্পের ভূমিকা’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এটিএস এক্সপোতে টেস্টিং সলিউশন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস, কম্পোনেন্টস, সার্ভিসেস ও প্রোডাক্ট- এই ৪টি ক্যাটাগরিতে পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে।

টেস্টিং সলিউশনস ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন ধরনের টেস্টিং ফ্যাসিলিটিস প্রদর্শন করা হচ্ছে। যেমন: ক্যাবল ও ওয়্যার ল্যাব, নয়েজ টেস্টিং ল্যাব, এলইডি ল্যাব, নাসদাত-ইউটিএস, প্রেসিসং ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যাবরেটরি, প্রোডাক্ট কোয়ালিটি কন্ট্রোল ল্যাব, ওয়ালটন সাইন্স রিসার্চ ল্যাব ও ওয়ালটন ম্যাটালারজিক্যাল এনালাইসিস ও রিসার্চ ল্যাব। মেলায় সার্ভিসেস ক্যাটাগরিতে থাকবে কন্সট্র্যাকশন সার্ভিস, মোল্ড অ্যান্ড ডাই, পাওয়ার প্রেস, রেফ্রিজারেটর ও এসএমটি (সারফেস মাউন্টিং টেকনোলজি)।
প্রোডাক্ট ক্যাটাগরিতে প্রদর্শিত হচ্ছে ফ্রিজ, টিভি, এয়ার কন্ডিশনার, ফাসেনার, পিসিবি হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্সেস, কেমিক্যাল, মাস্টারব্যাচেস মোল্ড অ্যান্ড ডাই, আইটি প্রোডাক্ট ইত্যাদি।

ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস ও কম্পোনেন্টস ক্যাটাগরিতে দেশের বিভিন্ন ফরওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পখাতে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত প্রধান কম্পোনেন্টসগুলো প্রদর্শন করা হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে রেফ্রিজারেটর কম্পোনেন্টস, এয়ার কন্ডিশনার কম্পোনেন্টস, টেলিভিশন কম্পোনেন্টস, হোম অ্যাপ্লায়েন্স কম্পোনেন্টস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্স কম্পোনেন্টস, লিফট কম্পোনেন্টস, কাস্টিং কম্পোনেন্টস ইত্যাদি। এসব কম্পোনেন্টস ও ম্যাটেরিয়ালস এ্যাক্সো, অটোমোবাইলস, সিমেন্ট, সিরামিকস, কেমিক্যাল, কসমেটিকস, ডিজিটাল, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স, ফার্মাসিউটিক্যালস, গ্লাস, হেভি-ভেহিক্যালস অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং, আইওটি, আইটি, লেদার, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, প্লাস্টিক, প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিকেশনস, গার্মেন্টস, পাইকারি ও ট্রেডিং বিজনেস ইত্যাদি শিল্পখাতে ব্যবহৃত হয়।

অর্থসূচক/এমআর/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.