‘বেনামি ঋণের বোঝা ব্যবসায়ীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে’

দেশে খেলাপি ঋণ নিয়ে অনেক আলোচনা হয়। তবে বেনামি ঋণ কত তা নিয়ে কেউ লেখে না। বেনামি ঋণের বোঝা ব্যবসায়ীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী খোকন।

রোববার (৯ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ানবাজার সিএ ভবন অডিটোরিয়ামে দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) ও ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘মনিটরি পলিসি অ্যান্ড ইমপ্লিকেশন’ বিষয়ক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, গত বছর দেশে ৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের জ্বালানি আমদানি করা হয়েছিলো। তবে চলতি বছর লাগবে ১০ বিলিয়ন ডলার। আমদানি নির্ভর জ্বালানি দিয়ে এদেশের ইন্ডাস্ট্রি খাতের উন্নয়ন হবে না। রাষ্ট্রের বোঝা ব্যক্তির ওপর চাপিয়ে দেওয়া যায় না। শিল্প খাতের ওপর অনেক চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। কিছু লোক বিদ্যুৎ খাতে ব্যবসা করে রাতারাতি বিলিয়নার হয়ে গেছে। এসব লোকদের হাতে দেশ ছেড়ে দিলে যতই মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন, তাতে কোন লাভ হবে না।

তিনি আরও বলেন, দেশে হোল্ডিং ট্যাক্স দিচ্ছে ২ কোটি ৮০ লাখ মানুষ। আর ট্যাক্স দিচ্ছে মাত্র ৩০ লাখ মানুষ। বাংলাদেশ সরকার যদি শিল্প বন্ড ছাড়তো, সেই অর্থ শিল্পে বিনিয়োগ করতে পারতো। কোন ব্যাংকে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ নেই। তারা অসম প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হচ্ছে। তবে আগামী দিনের মুদ্রানীতিতে শিল্পে বিনিয়োগের জন্য ভালো চিত্র থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

আলোচনায় আইসিএবি সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন সংকটের মধ্যেই মুদ্রনীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন এই মুদ্রানীতিতে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থার মূল চ্যালেঞ্জ হল অর্থ সরবরাহকে কঠোর করে মুল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা। গত দুই বছরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ ভূ-রাজনৈতিক সংকটের কারণে বর্তমান বিশ্ব একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করেছে। করোনা পরবর্তী সময়ে বিশ্ববাজারে জ্বালানিসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে। পণ্যের বাজার ক্রমশ অস্থির হয়ে উঠেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি হবে ৮ দশমিক ৬ শতাংশের কাছাকাছি।

আইসিএবি সভাপতি বলেন, সংকটের এমন পরিস্থিতিতে মুদ্রাস্ফীতির চাপ কমাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোজোন এবং ভারতের মতো অনেক উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির পথ অনুসরণ করেছে। টাকার বিপরীতে ক্রমবর্ধমান ডলারের মূল্য, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবণতা এবং বর্তমান বাজার পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে, বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে।

 

অর্থসূচক/এমএইচ/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.