রাজধানীতে ঈদের দ্বিতীয় দিনেও চলছে পশু কোরবানি

ত্যাগের মহিমায় সারা দেশে বৃহস্পতিবার পালিত হ‌য়েছে মুসলমানদের অন্যতম বড় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। আজ ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চলছে পশু কোরবানি।

শুক্রবার (৩০ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পাড়া-মহল্লা ও প্রধান সড়কে পশু কোরবানি দিতে দেখা গেছে। ঈদের দিনের মতোই উৎসবমুখর পরিবেশে পশু কোরবানি করছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।

ইসলামের বিধান অনুযায়ী, ঈদের দিন ছাড়াও আ‌রও দু‌দিন তথা জিলহজ মাসের ১১ তারিখ (ঈদের দ্বিতীয় দিন) ও ১২ তারিখও (ঈদের তৃতীয় দিন) সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত কোরবানি করার সুযোগ রয়েছে। এই বিধানের আলোকে দ্বিতীয় দিন অনেকে পশু কোরবানি করছেন।

ত্যাগের মহিমা এবং মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য কেউ একাধিক কোরবানি দিচ্ছেন। আবার কেউ পারিবারিক ঐতিহ্য রক্ষায়, কেউ আবার ব্যবসা ও কাজের চাপ এবং কসাইয়ের অভাবে ঈদের দিন পশু জবাই দিতে পারেনি তারাই দ্বিতীয় দিনে কোরবানি দিচ্ছেন।

মুসলমানদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসবের একটি ঈদুল আজহা। সারাবিশ্বের মুসলমানরা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও করুণা লাভের জন্য হজরত ইব্রাহিমের (আ.) পুত্রকে কোরবানির প্রতীকী ত্যাগের ঐতিহ্য অনুসরণে ১০ জিলহজ পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন। ইসলামের বিধান অনুযায়ী ১০, ১১ ও ১২ জিলহজ তিনদিন কোরবানি দেওয়া যায়। সেই হিসাবে এবার ২৯, ৩০ ও ১ জুলাই কোরবানি দিতে পারবে।

এদিকে শুক্রবার (২৯ জুন) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইফতেখার হোসেন এ তথ্য জানান, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে কোরবানির জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মসহ পশুর হাটগুলোতে মোট ৯৪ লাখ ৪৩ হাজারের বেশি পশু বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে ৪৩ লাখ ৬১ হাজার গরু-মহিষ এবং ৫০ লাখ ৮১ হাজার ছাগল, ভেড়া ও অন্যান্য পশু বিক্রি হয়েছে। তবে বিক্রি হওয়া মোট গবাদিপশুর এ সংখ্যা দিয়ে কোরবানি হওয়া মোট পশুর সংখ্যা নিরূপণ করা যাবে না বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

তিনি জানান, কারণ বিক্রি হওয়া পশুর সঙ্গে গৃহপালিত যেসব গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে, সেগুলো যুক্ত করে এ বছর মোট কোরবানি হওয়া গবাদিপশুর সংখ্যা নির্ধারণ হবে। মোট কোরবানি হওয়া পশুর সংখ্যা নিয়ে কাজ করছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর মোট কোরবানির পশু বিক্রি হয়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি।

সম্প্রতি সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম জানান, এ বছর কোরবানির পশুর সম্ভাব্য চাহিদা ১ কোটি ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭৩৯টি। কোরবানিযোগ্য গবাদিপশু রয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৬ হাজার। সে হিসেবে এবার ২১ লাখ ৪১ হাজার ৫৯৪টি পশু উদ্বৃত্ত আছে।

মন্ত্রী বলেন, গতবছরের চেয়ে এ বছর ৪ লাখ ১১ হাজার ৯৪৪টি পশু বেশি। এ বছর কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর মধ্যে ৪৮ লাখ ৪৩ হাজার ৭৫২টি গরু-মহিষ, ৭৬ লাখ ৯০ হাজার ছাগল-ভেড়া এবং ২ হাজার ৫৮১টি অন্যান্য প্রজাতির গবাদিপশু।

এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৮ লাখ ৯৫ হাজার ৪৫৪টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২০ লাখ ৫৩ হাজার ১২৮টি, রাজশাহী বিভাগে ৪৫ লাখ ১১ হাজার ৬১৪টি, খুলনা বিভাগে ১৫ লাখ ১১ হাজার ৭০৮টি, বরিশাল বিভাগে ৪ লাখ ৯৩ হাজার ২০৬টি, সিলেট বিভাগে ৪ লাখ ১০ হাজার ২২৫টি, রংপুর বিভাগে ১৯ লাখ ৬২ হাজার ৯৫১টি এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৬ লাখ ৯৮ হাজার ৪৭টি কোরবানিযোগ্য গবাদিপশু রয়েছে।

অর্থসূচক/এমএইচ

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.