ভারত-পাকিস্তানে আছড়ে পড়বে ‘ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়’

প্রবল ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় ধেয়ে আসছে ভারতের গুজরাট ও পাকিস্তানের করাচির দিকে। গুজরাটের কচ্ছ ও পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বিপর্যয় এখন অত্যন্ত শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের হয়ে এগোচ্ছে এবং বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তা ভারত ও পাকিস্তানের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে।

বৃহস্পতিবার সকালে বিপর্যয় গুজরাট থেকে দুইশ কিলোমিটার দূরে ছিল। স্থানীয় সময় বিকেল চারটে থেকে রাত আটটার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ভারতের সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছ এবং পাকিস্তানের মান্ডভি ও করাচির কাছে আছড়ে পড়বে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এই ঘূর্ণিঝড়ের গতি হবে ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।

এদিকে গুজরাটে এখনই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, পোরবন্দর, রাজকোট, জুনাগড়, মোরবি এবং সৌরাষ্ট্র ও উত্তর গুজরাটের বিভিন্ন এলাকায় প্রবল থেকে অতি-প্রবল বৃষ্টি হবে। এই পরিপ্রেক্ষিতে সব বন্দর বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মৎসজীবীদের জানানো হয়েছে, তারা সমুদ্রে যেতে পারবেন না। সমুদ্র এখন থেকেই উত্তাল। বড় বড় ঢেউ উঠছে। জোরে হাওয়া বইছে। গুজরাটে উপকূলের মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গুজরাটে উপকূলের মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

পশ্চিম রেলওয়ে জানিয়েছে, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে ৭৬টা ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। দ্বারকা ও সোমনাথ মন্দির বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মোট ৭৪ হাজার মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

জাতীয় ও রাজ্য মিনিয়ে মোট ১২৭টি বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর টিমকে উপকূল এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আছেন বিদ্যুৎ বিভাগের চারশ কর্মী।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিপর্যয় নিয়ে বৈঠক করেছেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বৈঠক করেছেন সেনা কর্তাদের সঙ্গে। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ব্যাংক ও বিমা সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

এদিকে পাকিস্তানও মৎসজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করেছে। দেশটির পরিবেশমন্ত্রী শেরি রেহমান জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় করাচির পূবদিকে সরে গেছে। তবে তা পাকিস্তানের উপকূলবর্তী এলাকার কাছে চলে আসছে। বিপর্যয়ের ফলে প্রবল বৃষ্টি ও ঝড় হবে। এর ফলে উপকূলবর্তী এলাকায় প্রবল ক্ষতির সম্ভাবনা আছে।

উপকূলের মানুষদের অনেকে ত্রাণশিবিরে যেতে চাইছিলেন না বলে সংবাদপত্র ডন জানিয়েছে। সরকারি চিকিৎসককে উদ্ধৃত করে তারা বলেছে, স্থানীয় মানুষের বক্তব্য ছিল, সরকারি ত্রাণশিবিরে কোনো ব্যবস্থাই থাকে না। তাদের পুলিশ জোর করে ত্রাণশিবিরে নিয়ে গেছে।

ন্যাশনাল ডিসাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান ইনাম হায়দার মালিক বলেছেন, ‘ঝড় এখন যেদিকে আসছে, তাতে মনে হয়, করাচি শহর বেঁচে যাবে। তা সত্ত্বেও করাচির বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে মানুষকে ত্রাণশিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’

সিন্ধু প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘৬৭ হাজার ৩৬৭ জনকে ত্রাণশিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যেখান দিয়ে ঝড় যেতে পারে, সেখানে ৮২ শতাংশ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে দেয়া হয়েছে।’ সূত্র: ডিডাব্লিউ, পিটিআই, এনডিটিভি, ডন, রয়টার্স

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.