যোগাযোগ ও পরিবহন খাতে বরাদ্দ বেড়েছে ৬ হাজার কোটি

পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৮৭ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদানের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্থফা কামাল। যা চলতি বাজেটের পরিবহন ও যোগাযোগ খাতের বরাদ্দের তুলনায় ৬ হাজার ১১০ কোটি টাকা বেশি। ‘উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে’ এই শিরোনামকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেট পেশকালে এ প্রস্তাব করেন তিনি।

বর্তমান ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ খাতে ৮১ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল।

বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে আমরা সড়ক, সেতু, কালভার্ট, ব্রিজ ইত্যাদি নির্মাণ করার ফলে সারা দেশে ২২ হাজার ৪৭৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সুগঠিত মহাসড়ক তৈরি হয়েছে। সামনের দিনগুলোতে সারা দেশে ২ হাজার ৩৪২ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়কের উভয় পাশে সার্ভিস লেনসহ ৪-লেনে উন্নীতকরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছি।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্থফা কামাল বলেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদকালে বাস্তবায়িত দেশের ৮টি বিভাগের ২৫টি জেলায় মোট ১০০টি সেতু উদ্বোধন করা হয়েছে, যার মোট দৈর্ঘ্য ৫ হাজার ৪৯৪ মিটার।

মন্ত্রী বলেন, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে সড়ক টানেল নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে। শিগগিরই এটিকে যানচলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত র‍্যাম্পসহ ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ জুন ২০২৪ সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি। আগামী সেপ্টেম্বর ২০২৩ এর মধ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে তেজগাঁও পর্যন্ত অংশ চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

রেল খাত উন্নয়ন নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের সাশ্রয়ী ও নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে রেল খাতের উন্নয়নের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ২০০৯ সালের পর থেকে ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত ৭৩৯ দশমিক ৭১ কিলোমিটার নতুন রেল লাইন নির্মাণ, ২৮০ দশমিক ২৮ কিলোমিটার মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর, ৭৩২টি নতুন রেলসেতু নির্মাণ এবং ১৪৪টি নতুন ট্রেন চালু করা হয়েছে।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প; যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু, দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হতে মিয়ানমারের নিকটে গুনদুম পর্যন্ত ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণ ইত্যাদি।

যানজট নিরসন ও নিরাপদ সড়ক নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ঢাকা মহানগরী ও তৎসংলগ্ন এলাকার যানজট নিরসন ও দ্রুত যোগাযোগ নিশ্চিত করতে ৬টি মেট্রোরেল লাইনের একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার হচ্ছে সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা।

এবারের বাজেটের মূল শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘উন্নয়নের দীর্ঘ অগ্রযাত্রা পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে।’ মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে পাঁচ লাখ তিন হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের ব্যয় চালাতে এনবিআরকে চার লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের টার্গেট দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় এক লাখ এক হাজার ২৭৮ কোটি টাকা বেশি।

অর্থসূচক/এমআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.