ফের পুতিনের সঙ্গে আলোচনার অপেক্ষায় শলৎস

গত বছর রাশিয়া ইউক্রেনের উপর হামলা চালানোর ঠিক আগে পর্যন্ত পশ্চিমা বিশ্বের একাধিক নেতা বারবার মস্কোয় গিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করেন৷ জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসও পুতিনকে এমন হামলার পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করেন৷ যুদ্ধ শুরু হবার পর তিনি বা অন্যান্য নেতারা আর মস্কোয় যাননি৷

তবে টেলিফোনে পুতিনের সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে গেছেন শলৎস ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ৷ শলৎস গত ডিসেম্বর মাসে শেষবার পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন৷ জার্মানির এক সংবাদপত্রের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি আবার রুশ প্রেসি়ডেন্টের সঙ্গে আলোচনার পূর্বাভাস দিয়েছেন৷

ডিসেম্বর মাসের শুরুতে পুতিনের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টার আলোচনায় শলৎস আবার ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার সৈন্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিলেন৷ অন্যদিকে পুতিন পশ্চিমা বিশ্বের বিরুদ্ধে ‘ধ্বংসাত্মক নীতি’ অনুসরণ করার অভিযোগ করেন৷ তারপর থেকে বার্লিন ও মস্কোর মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে গেছে৷ কোলোন শহরের ‘ক্যোলনার স্টাট-আনসাইগার’ সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শলৎস ইউক্রেনের প্রতি লাগাতার সমর্থন ও সহায়তার অঙ্গীকার করলেও ন্যাটো ও রাশিয়ার মধ্যে সরাসরি সংঘাত এড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করার অঙ্গীকার করেন৷ সে ক্ষেত্রে একক সিদ্ধান্তের বদলে বন্ধু ও সহযোগী দেশগুলির সঙ্গে নিবিড় সমন্বয়ের প্রয়োজনও তুলে ধরেন তিনি৷ রাশিয়ার অধিকৃত এলাকার সীমান্ত মেনে নিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে ‘শীতল শান্তি’-র সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন জার্মান চ্যান্সেলর৷

এদিকে শুক্রবার ইউক্রেনের সামরিক কর্তৃপক্ষ রাজধানী কিয়েভের উপর রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বাড়তি বিপদের আশঙ্কা করেছে৷ তবে গোটা অঞ্চলে এয়ার ডিফেন্স প্রণালীগুলি ঠিকমতো কাজ করছে বলে জানানো হয়েছে৷ ভিয়েতনাম সফররত রাশিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, ইউক্রেন সংকট বহুদিন ধরে চলবে৷ এমনকি কয়েক দশক পরেও হয়তো সংকটের অবসান হবে না৷

ইউক্রেন তথা পশ্চিমা বিশ্বের উপর চাপ বজায় রাখতে রাশিয়া প্রতিবেশী দেশ বেলারুশে ‘ট্যাকটিকাল’ পরমাণু অস্ত্র মোতায়েনের কাজ শুরু করেছে বলে দাবি করেছেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেংকো৷ তিনি অবশ্য অস্ত্রের সংখ্যা ও স্থান জানাতে প্রস্তুত নন৷ পোল্যান্ডের সীমান্তে এমন অস্ত্র মোতায়েন করা হতে পারে, এমন সম্ভাবনার কথাও আগে শোনা গিয়েছিল৷

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে আবার বন্দি বিনিময় করে ১০৬ জন ইউক্রেনীয় সৈন্যকে দেশে ফেরানো হয়েছে৷ তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নিখোঁজ ছিলেন৷ মূলত বাখমুত অঞ্চলেই লড়াইয়ের সময়ে রাশিয়া তাদের আটক করে৷ বাখমুতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান এখনো চলছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক৷ ইতালির এক টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি আবার রাশিয়ার ভূখণ্ডের উপর ইউক্রেনের হামলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন৷ পশ্চিমা বিশ্বের সরবরাহ করা অস্ত্র কাজে লাগিয়ে শুধুমাত্র ইউক্রেনের অধিকৃত ভূখণ্ড থেকে রুশ সৈন্যদের তাড়িয়ে দেবার চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান৷ এফ-১৬ যুদ্ধবিমান হাতে পেলে অবশেষে ইউক্রেনের আকাশসীমা বন্ধ করা সম্ভব হবে বলে পোদোলিয়াক আশা প্রকাশ করেন৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এএফপি, ডিপিএ

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.