গাড়ি রপ্তানিতে জাপানকে টপকে এক নাম্বারে চীন

বিশ্ব অটোমোবাইলস বাজারে নিজের অবস্থান ক্রমেই সংহত করে চলেছে চীন। গতবছর দেশটি জার্মানিকে টপকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছিল। এবার  জাপানকে পেছনে ফেলে গাড়ি রপ্তানিতে সবার শীর্ষে উঠে এসেছে দেশটি। চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে (জানূয়ারি-মার্চ) দেশটি ১০ লাখ ৭০ হাজারটি গাড়ি রপ্তানি করেছে। একই সময়ে জাপান রপ্তানি করেছে ৯ লাখ ৫৪ হাজার ১৮৫টি গাড়ি।

খবর বিবিসির।

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনের গাড়ি রপ্তানিতে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দেশটির গাড়ি রপ্তানির সংখ্যা বেড়েছে ৫৮ শতাংশ। এই সময়ে জাপানের গাড়ি রপ্তানিও বেড়েছে। তবে প্রবৃদ্ধির হার ছিল চীনের তুলনায় অনেক কম। প্রথম প্রান্তিকে জাপানের গাড়ি রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৬ শতাংশ।

মূলত বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা বাড়ায় এবং রাশিয়ার কাছে গাড়ি বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় চীন শীর্ষে চলে গেছে।

গতবছর (২০২২) চীন ৩২ লাখ গাড়ি রপ্তানি করে। চীনের শুল্ক বিভাগ এ তথ্য জানায়। অন্যদিকে গত বছর জার্মানি রপ্তানি করে ২৬ লাখ গাড়ি। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে বৈদ্যুতিকের দিকে পা বাড়ানোয় চীনের মোটর শিল্পে এই অগ্রগতি ঘটেছে।

চীন এ বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে গত বছরের চেয়ে নতুন জ্বালানিচালিত যানবাহন রপ্তানি ৯০ শতাংশ বাড়িয়েছে। এর মধ্যে বৈদ্যুতিক গাড়ি রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলা’র চীনা কোম্পানি ‘এসএআইসি’ নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ি রপ্তানিকারকের তালিকায় রয়েছে, যেটি কিনা এমজি ব্র্যান্ড ও বিওয়াইডির মতো প্রতিষ্ঠানের মালিকানা প্রতিষ্ঠান। যুক্তরাষ্ট্রের বাঘা বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেটেরও বিনিয়োগ রয়েছে কোম্পানিটিতে।

এলন মাস্কের বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির চীনের সাংহাইতে বড়সড় গাড়িনির্মাণ কারখানা রয়েছে, যেখান থেকে জাপানে ও ইউরোপের অনেক দেশে গাড়ি রপ্তানি করা হয়। টেসলা’র বিশাল এই কারখানায় বর্তমানে বছরে সাড়ে ১২ লাখ গাড়ি প্রস্তুত করতে সক্ষম। কোম্পানিটি আরও সক্ষমতা বাড়াতে চাইছে। গত মাসে কোম্পানিটি কানাডায় রপ্তানির জন্য মডেল ওয়াই এসইউভি তৈরি শুরু করেছে।

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া চীন থেকে গাড়ি আমদানি বাড়িয়েছে।

গত বছর গিলি, চেরি ও গ্রেটওয়ালের মতো চীনা গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার বাজারে ভক্সওয়াগন ও টয়োটার মতো প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিকে টপকে যায়। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পরই মূলত চীনের এই ব্যবসাবৃদ্ধি ঘটে।

চিনে যুক্তরাষ্ট্রের টেসলা, যুক্তরাজ্যের এমজি (মরিসন গ্যারেজ), জার্মানির মার্সিডিজসহ বিশ্বের বড় বড় অটোমোবাইল কোম্পানির উৎপাদন সুবিধা রয়েছে। কোনো কোনো কোম্পানি চীনের কোম্পানির সাথে জয়েন্ট ভেঞ্চার করে কারখানা স্থাপন করেছে। আবার কোনো কোনো কোম্পানি সরাসরি নিজেরা কারখানা স্থাপন না করে চীনা কোম্পানির কারখানায় নিজেদের প্রযুক্তি ব্যবহার ও মান নিশ্চিত করে গাড়ি উৎপাদন করিয়ে নিচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে চীনে দ্রুত অটোমোবাইলের নানা প্রযুক্তি স্থানান্তরিত হয়েছে। আর এই সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে দেশটি বিদেশী ব্র্যান্ডের গাড়ির পাশাপাশি নিজস্ব ব্র্যান্ডের গাড়ি উৎপাদন ও রপ্তানি করে চলেছে।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.