জাতিসংঘ-তালেবান সম্পর্ক: আফগানিস্তানে আছে, সম্মেলনে নেই

জাতিসংঘ আপাতত আফগানিস্তানে কার্যক্রম চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস৷ কাতারের দোহায় আফগানিস্তান নিয়ে দুই দিনের সম্মেলন শেষে এই মন্তব্য করেন তিনি৷

যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়াসহ ২০টির বেশি দেশের প্রতিনিধি ঐ সম্মেলনে অংশ নেন৷ তালেবানের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক রাখা উচিত তা নিয়ে তারা আলোচনা করেন৷ আফগানিস্তানকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি৷ জাতিসংঘের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে তালেবান৷

দোহায় তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান সুহেল শাহিন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ইসলামিক আমিরাত অফ আফগানিস্তান আইইএর প্রতিনিধি ছাড়া এ ধরনের সম্মেলন আয়োজন সফল হয় না, বরং অনেক সময় উলটো হতে পারে৷ আমরা যে সম্মেলনের অংশ নই, সেই সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্ত কীভাবে গ্রহণযোগ্য বা বাস্তবায়িত হতে পারে? এটা বৈষম্যমূলক এবং অন্যায়৷’

২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা আফগানিস্তানে তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নিয়েছে৷ এদিকে আফগানিস্তানে জাতিসংঘের নারী কর্মীদের কাজের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তালেবান৷ তারপরও জাতিসংঘ সাধারণ আফগানদের ছেড়ে যাবে না বলে জানিয়েছেন গুতেরেস৷

আফগানিস্তানের নারী বিষয়ক সাবেক মন্ত্রী সিমা সমর মনে করেন তালেবানের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘শুরুতেই তাদের সঙ্গে আলোচনা করে একটা স্পষ্ট বার্তা দেয়া উচিত ছিল যে, মানবাধিকার লঙ্ঘন গ্রহণযোগ্য নয় এবং এটা মেনে নেয়া হবে না৷’

ওয়াশিংটনভিত্তিক আটলান্টিক কাউন্সিলের ফেলো এবং কানাডা, ফ্রান্স ও ইইউতে আফগানিস্তানের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করা ওমর সামাদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘লাখ লাখ দরিদ্র আফগান পরিবারের দুর্দশার কথা ভেবে আফগানিস্তানের উপর দেয়া নিষেধাজ্ঞা পর্যালোচনা করা উচিত৷’ তালেবানের সঙ্গে এখন যে সম্পর্ক আছে তা পরীক্ষা করে ভবিষ্যতে কীভাবে আরো কার্যকরভাবে আগানো যায় সেই চেষ্টা করারও পরামর্শ দেন তিনি৷

এদিকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তালেবান৷ কারণ সেটি হলে তাদের অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান হতে পারে বলে মনে করছে তারা৷ এই লক্ষ্যে সম্প্রতি তারা ইসলামিক স্টেট-খোরাসানের নেতাকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে৷ ঐ সংস্থা ২০২১ সালের আগস্টে কাবুল বিমানবন্দরে হামলার জন্য দায়ী বলে জানিয়েছে তালেবান৷ ঐ হামলায় ১৩ মার্কিন সেনা ও প্রায় ১৭০ জন আফগান নাগরিক প্রাণ হারান৷

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.