ঈদে বাড়ি যাওয়ার আগে অবশ্যই যা করা উচিৎ

ঈদ মানেই আনন্দ। এই আনন্দটা পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে চান সবাই। তাই তো ঈদে বাড়ি যাওয়ার ধুম সবার। রমজানের শেষ মুহুর্তে বাড়ি যেতে সবারই কম বেশি তাড়াহুড়ো লাগে। আর এই তারাহুড়োই বয়ে আনে অনেকের জন্য বিপদ। তাই বাড়ি যাওয়ার আগে কয়েকটা বিষয় আমাদের খুব গুরুত্বের সঙ্গে করে যেতে হবে। তা হলেই অনেক ধরনের বিপদ থেকে বেঁচে যাওয়া সম্ভব।

ঘরের বৈদ্যুতিক সুইচ বন্ধ করা

সুইচ বন্ধ না করা খুব কমন একটা ভুল আমরা তারাহুড়োতে প্রায় সবাই ই করে থাকি। বিশেষ করে বের হওয়ার সময় বাড়িতে যদি বিদ্যুৎ না থাকে, তাহলে লাইট-ফ্যানের সুইচ অন ছিল কি না, অনেক সময় বোঝা যায় না। লম্বা ছুটিতে যাওয়ার আগে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে বাসার প্রতিটি লাইট, ফ্যানের সুইচ বন্ধ করা হয়েছে কি না। এমনকি বাসার গুরুত্বপূর্ণ লাইন, যেমন কম্পিউটার, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ওয়াশিং মেশিন ইত্যাদির প্লাগ খুলে রাখার চেষ্টা করবেন।

দরকারি কাগজপত্র ফটোকপি করে রাখা

যাত্রাপথে ভিড়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হারিয়ে গেলে পুনরুদ্ধার করতে বিশাল ঝক্কিঝামেলা পোহাতে হবে। তাই ঈদে বাড়ির পথে পা বাড়ানোর আগে যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, যেমন আইডি কার্ড, পাসপোর্ট ইত্যাদি ফটোকপি করে এক কপি নিজের কাছে রাখুন এবং মূল কপি সযত্নে রেখে যান।

গ্যাস ও পানির লাইন ভালোভাবে বন্ধ করা

ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার আগে গ্যাস সিলিন্ডার অথবা গ্যাসের লাইন বন্ধ করে বের হবেন। এমনকি বাড়ি থেকে ফিরে এসে চুলা জ্বালানোর আগে বাসার দরজা-জানালা খুলে দিন। এতে বাসার ভেতরে গ্যাস জমে থাকলেও বের হয়ে যাবে। এমনকি পানির কল ভালোভাবে বন্ধ হয়েছে কি না, সে ব্যাপারেও নজর রাখবেন।

বাসার গাছ ও পোষা প্রাণী

বাড়ির গাছগুলোতে পর্যাপ্ত পানি দিয়ে যান, যাতে আপনার অনুপস্থিতিতেও তারা বেঁচে থাকতে পারে। পোষা প্রাণী থাকলে তাকে একা বাসায় রেখে যাবেন না। সম্ভব হলে তাকে সঙ্গে করে নিয়ে চলুন অথবা পরিচিত কারও বাসায় রেখে যান। ঢাকাতেই পোষা প্রাণীদের কিছু কেয়ার সেন্টার গড়ে উঠেছে, যেখানে নামমাত্র মূল্যে চাইলেই নিজের পোষা প্রাণীকে রেখে যেতে পারবেন।

ফ্রিজ ও ডাস্টবিন খালি করা

বাড়ি যাওয়ার আগে ফ্রিজ ও ডাস্টবিন যথাসম্ভব খালি রাখার চেষ্টা করুন। নইলে দীর্ঘ ছুটি শেষে বাড়ি ফিরে দেখা যায়, ফ্রিজে থাকা খাবার নষ্ট হয়ে গেছে। তখন চাইলেও সেই বাসি খাবার খাওয়া সম্ভব হয় না। অন্যদিকে ডাস্টবিন পরিষ্কার না করা হলে ময়লা জমে ঘরে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। ঘর বন্ধ থাকায় দুর্গন্ধ বেরও হতে পারে না, এ কারণে ছুটি শেষে ঘরে ফিরে মুখোমুখি হতে হয় দুর্গন্ধের।

বাসার নিরাপদ নিশ্চিত করা

বাড়ি যাওয়ার আগে দরজা-জানালা ঠিকঠাক বন্ধ করেছেন কি না, খেয়াল করুন। প্রয়োজনে বারবার দেখে নিন, বাসায় তালা ঠিকভাবে লাগানো হয়েছে কি না। ঈদের সময়টায় চুরি-ডাকাতি বেড়ে যায়। তাই বাসার সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এরপর যাত্রাপথে বের হবেন।

ঘর গুছিয়ে রাখা

দীর্ঘ যাত্রার আগে ঘর ভালোমতো পরিষ্কার করে গুছিয়ে রেখে যান। ঈদের ছুটি শেষে যখন আবারও ব্যস্ত জীবনে ফিরবেন, তখন অগোছালো ঘরবাড়ি দেখে মুহূর্তেই মন খারাপ হয়ে যেতে পারে। যে কারণে ছুটিতে যাওয়ার আগেই ঘরদোর গুছিয়ে যান। এতে ছুটি শেষ করে ফিরে অস্বস্তিকর গন্ধ বা পোকামাকড়ের পাল্লায় পড়তে হবে না।

একটি ছবি তুলে নিন

বাসা থেকে বের হওয়ার আগে প্রতিটি কক্ষের একটি ছবি তুলে নিন। ছুটি শেষে বাড়ি ফিরে যাতে যেকোনো অসংগতি সঙ্গে সঙ্গে চোখে পড়ে ও ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

ইকটু মনে করে এইসব কাজ করে গেলে আমাদের ঈদের আনন্দটা হতে পারে আনন্দময়। কোন ধরনের চিন্তা মনে আসবে না। তারাহুড়ো করে গেলে অনেক কিছু মনে থাকে না তখন হঠাৎ করে মনের মধ্যে আসে ঘরের বাতি ফ্যান জ্বালে আছে কিনা, গ্যাসের লাইন বন্ধ করেছিলাম কিনা আরো কত কি। তাই একটু সময় নিয়ে আমাদের এই সবগুলো কাজ করে সস্তিতে বাড়ির উদ্দেশে রওনা করতে হবে। তাহলে ঈদ হবে চিন্তা মুক্ত।

অর্থসূচক/ এইচএআই

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.