আদালত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া জঙ্গিরা কোথায়, জানাল সিটিটিসি

ঢাকার আদালত চত্বর থেকে ছিনিয়ে নেওয়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছয় মাসের পরিকল্পনায় আদালত চত্বর থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয় এবং পরিকল্পনার তথ্য জেলে থাকা জঙ্গিদের কাছে পৌঁছে দেয় ফাতেমা তাসনীম শিখা। তিনি আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে যাওয়া দুই জঙ্গির একজন আবু সিদ্দিক সোহেলের স্ত্রী এবং জঙ্গি ছিনতাইকাণ্ডের ‘প্রধান সমন্বয়ক’।

শনিবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসির) মো. আসাদুজ্জামান।

গতকাল (৭ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অভিযান চালিয়ে জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনার মূল সমন্বয়ক ফাতিয়া তাসনিম শিখা (৩১) ও তার আশ্রয়দাতা হুসনা আক্তার হুসনাকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে সিটিটিসি। ফাতিয়া তাসনিম শিখা পালিয়ে যাওয়া জঙ্গি আবু সিদ্দিক সোহেলের স্ত্রী।

পুলিশ জানায়, ফাতেমা তাসনীম শিখা ২০১৪ সালে এমআইএসটি থেকে প্রথম শ্রেণিতে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেন। একপর্যায়ে তার ভাই মোজ্জাম্মেল হোসেন সাইমনের মাধ্যমে আনসার আল ইসলামের আদর্শে দীক্ষিত হন। পরবর্তী সময়ে সায়মনের মাধ্যমে আবু সিদ্দীক সোহেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সোহেল আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার সদস্য ছিলেন। সোহেলের সঙ্গে বিয়ের পর থেকে সে আরও গভীরভাবে সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে।

আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আদালত চত্বর থেকে ছিনিয়ে নেওয়া জঙ্গিরা দেশেই আছেন। আদালত থেকে তারা সদরঘাট হয়ে পালিয়ে ‘আনসার হাউজে’ অবস্থান নেয়। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আমরা শিখাকে গ্রেপ্তারের আগে পরিকল্পনা ও পালিয়ে যাওয়ার বিস্তারিত তথ্য জানতে পারছিলাম না। শিখাকে গ্রেপ্তারের পর আমরা কোন দিক দিয়ে পালিয়েছে, তা জানতে পেরেছি।’

সিটিটিসি জানিয়েছে, আদালত থেকে জঙ্গিরা সদরঘাট হয়ে একটি শেল্টার হাউসে অবস্থান নেন। সেখান থেকে অন্য জায়গায় পালিয়ে যান তারা। আর আদালত চত্বর থেকে শিখাসহ অন্যরা বিকল্প রাস্তা দিয়ে এলাকা ছাড়েন।

গত বছরের ২০ নভেম্বর দুপুরে পুরান ঢাকার জনাকীর্ণ আদালত এলাকায় পুলিশকে স্প্রে নিক্ষেপ করে মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান এবং আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাবকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় তাদের সহযোগী জঙ্গিরা। এই দুজনই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের নেতা। তারা প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলাতেও আবু সিদ্দিকের ফাঁসির রায় হয়েছে। আসামি ছিনতাইয়ের ওই ঘটনায় সহযোগী বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। তবে প্রায় পাঁচ মাস ধরেই ওই দুই জঙ্গির কোনও হদিস মেলেনি। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় কোর্ট পরিদর্শক জুলহাস বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.