জাহাঙ্গীরের মেয়র পদ নিয়ে রিটের রায় পেছালো

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের বৈধতা নিয়ে রিটের ওপর রায় ঘোষণা পিছিয়েছে। মঙ্গলবার বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহ সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

আদালতে জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম কে রহমান, সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।

গত ২৮ মার্চ শুনানি শেষে এ বিষয়ে রায়ের জন্য ৩০ মার্চ দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। ৩০ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করতে একটি আবেদন দেন এবং সময় চান। এরপর আদালত আজ দিন রাখেন। আজও রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলাটির পরবর্তী তারিখ ২ মে নির্ধারণ করা হয়।

ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন জানান, স্থানীয় সরকার সিটি কর্পোরেশন আইনের কিছু মৌলিক বিধান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এখন উভয়পক্ষকে এ বিষয়ে শুনানি করতে বলেছেন। আদালত এ বিষয়ে ২ মে পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন।

গতকাল ৩ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন (ইসি) বৈঠক শেষে গাজীপুর সিটির ভোটের তফসিল ঘোষণা করেন। আগামী ২৫ মে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৭ এপ্রিল, মনোনয়ন বাছাই ৩০ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারে শেষ সময় ৮ মে, প্রতীক বরাদ্দ ৯ মে এবং ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ২৫ মে।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গোপনে ধারণ করা মেয়র জাহাঙ্গীরের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ১৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর বিভিন্ন অভিযোগে ২৫ নভেম্বর তাকে মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ জহিরুল ইসলামের সই করা প্রজ্ঞাপন জারি হয়।

মেয়র পদ ফিরে পেতে গত বছরের ১৪ আগস্ট রিট করেন জাহাঙ্গীর আলম। ওই রিটের শুনানি নিয়ে ২৩ আগস্ট রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এলজিআরডি সচিব, উপ-সচিব, আইন সচিব ও গাজীপুর জেলা প্রশাসককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে ক্ষমা করেছে তার দল। গেল ১ জানুয়ারি দলীয় সাধারণ সম্পাদকের দেয়া এক চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বার্থ, আদর্শ, শৃঙ্খলা তথা গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র পরিপন্থী কর্মকান্ডে সম্পৃক্ততার জন্য ইতোপূর্বে আপনাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার/অব্যাহতি দেয়া হয়। এতে বলা হয়, আপনার বিরুদ্ধে আনা সংগঠনবিরোধী কর্মকান্ডের অভিযোগ স্বীকার করে আপনি আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন এবং ভবিষ্যতে সংগঠনের গঠনতন্ত্র, নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কোনো কার্যকলাপে সম্পৃক্ত হবেন না মর্মে লিখিত অঙ্গীকার করেছেন। এমতাবস্থায়, গত ১৭ ডিসেম্বর গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংগঠনের গঠনতন্ত্রের ১৭ (৬) এবং ৪৭ (২) ধারা মোতাবেক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কাছে সাধারণ ক্ষমা প্রার্থনা করে আপনার পাঠানো লিখিত আবেদন পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থী কর্মকান্ড ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে আপনার প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করা হলো।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.