ঘর সামলাতে ব্যস্ত জার্মান সরকার

তিন দলের জোট সরকার চালাতে হলে মতবিরোধ হবেই৷ কিন্তু দেশটির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বে জার্মানির জোট সরকারের নেতা ও মন্ত্রীরা যেভাবে প্রকাশ্যে পরস্পরের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি করে আসছেন, তার ফলে সরকারের ভাবমূর্তি বেশ ধাক্কা খাচ্ছে৷ যৌথ সাধারণ কর্মসূচি রূপায়নের বদলে বিশেষ করে ছোট দুই শরিক দল নিজস্ব অ্যাজেন্ডা চাপিয়ে দিয়ে সমর্থক ও ভোটারদের মন জয় করতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠছে৷ চ্যান্সেলর হিসেবে শলৎসের কর্তৃত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠছে৷

করোনা মহামারি ও ইউক্রেন সংকটের ধাক্কায় বিপর্যস্ত অর্থনীতি এবং বেড়ে চলা মূল্যস্ফীতি মোকাবিলার বদলে মন্ত্রিসভায় কোন্দল সামলাতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন জার্মানির শীর্ষ নেতা৷ দ্বন্দ্ব ও মতবিরোধ কাটাতে তিন দলের কোয়ালিশন কমিটির প্রায় ৩০ ঘণ্টার ম্যারাথন বৈঠকের শেষে একটা সমাধাণসূত্র উঠে এসেছে৷

আলোচনার শেষে সব শরিক দলই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে৷ উদারপন্থি এফডিপি দলের নেতা ও অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনার বলেন, সব পক্ষই রফা মেনে নিয়েছে৷ তবে সরকারের কর্মসূচি রূপায়নের ক্ষেত্রে বাজেটের উপর কোনো বাড়তি চাপ পড়বে না৷ বরং ট্রাক চলাচলের উপর টোল ট্যাক্স বাড়িয়ে কিছু বাড়তি আয়ের আশা করছে সরকার৷ সেইসঙ্গে জলবায়ু সংরক্ষণ ও রূপান্তরের জন্য গঠিত বিশেষ তহবিল থেকেও বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থায়ন করা হবে৷ লিন্ডনার বলেন, মোট ১৪৪টি প্রকল্পকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে দ্রুত রূপায়ন করা হবে৷

সরকারের তিন শরিকের বিরোধ মিটিয়ে যে আপোশ মীমাংসা হয়েছে, তার ফলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত দ্রুত কার্যকর করা হবে বলে দাবি করা হচ্ছে৷ জলবায়ু সংরক্ষণ সংক্রান্ত আইন, সড়ক ও রেলপথ পরিবহণের উন্নতি, ঘরবাড়ি গরম রাখার ক্ষেত্রে তেল ও গ্যাসচালিত প্রণালীর বদলে পরিবেশবান্ধব সমাধানসূত্রের মতো উদ্যোগ জোরদার করতে চায় শলৎসের সরকার৷ ফলে বহু দশকের অবহেলার পর বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের আধুনিকীকরণের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করার আশা আবার উজ্জ্বল হয়ে উঠছে৷ সেই সঙ্গে সব সিদ্ধান্ত দ্রুত কার্যকর করতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কাটিয়ে তুলতে চায় জার্মানির ফেডারেল সরকার৷

এমন আপোশ মীমাংসার ফলে মন্ত্রিসভায় শান্তি ফিরে আসবে কিনা, সে বিষয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে৷ বিশেষ করে সবচেয়ে ছোট শরিক এফডিপি দল একের পর এক আঞ্চলিক নির্বাচনে খারাপ ফল করে জনসমর্থন আদার করতে মরিয়া হয়ে থাকায় নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ সবুজ দলের সঙ্গে বার বার প্রকাশ্য মতবিরোধের মাধ্যমে এফডিপি সরকারে নিজস্ব অবদান তুলে ধরার চেষ্টা করে আসছে৷ চ্যান্সেলর শলৎস অবশ্য আলোচনার শেষে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, তিন দল মিলে সত্যি বিশাল সাফল্য অর্জন করতে পেরেছে৷ ফলাফলই তা দেখিয়ে দিচ্ছে বলে তিনি মনে করেন৷ সূত্র :ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এএফপি

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.