বিক্ষোভের মুখে বিচারবিভাগীয় সংস্কার স্থগিত নেতানিয়াহুর

প্রবল বিক্ষোভ ও চাপের মুখে পড়ে তার প্রস্তাবিত বিচারবিভাগীয় সংস্কার স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করলেন নেতানিয়াহু। এরপরই ট্রেড ইউনিয়নগুলি তাদের ধর্মঘটের ডাক প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করায় নেতানিয়াহু প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বরখাস্ত করেছিলেন। তার প্রতিবাদে লাখো মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখান। ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন ধর্মঘটের ডাক দেয়। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি জানায় তারা এই সংস্কারের বিরোধী। এমনকী নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি ও জোট শরিক নেতাদের একাংশ এই সিদ্ধান্তে খুশি ছিলেন না।

এই পরিস্থিতিতে নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ‘যখন গৃহযুদ্ধ এড়ানোর জন্য আলোচনার একটা বিকল্প আছে, তখন আমি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সেই বিকল্পই নিচ্ছি।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও জানিয়েছিলেন, ৩০ এপ্রিল পার্লামেন্ট ডাকা হয়েছে। ততদিন পর্যন্ত যেন নেতানিয়াহু তার পরিকল্পনা রূপায়ণ না করেন।

নেতানিয়াহুর কট্টর ডানপন্থি সরকারের শরিকদল জুইশ পাওয়ার পার্টি জানিয়েছে, সংস্কার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা প্রক্রিয়া আগামী মাসের পার্লামেন্ট অধিবেশন পর্যন্ত পিছিয়ে দেবেন প্রধানমন্ত্রী।এক বিবৃতিতে দলটি বলেছে, পার্লামেন্টের আগামী অধিবেশনে বিচারব্যবস্থা সংস্কার বিল আলোচনার মধ্য দিয়ে পাস করানোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।

নেতানিয়াহু বিচারবিবাগের সংস্কার করে বিচারপতিদের নিয়োগের পূর্ণ ক্ষমতা সরকারের কাছে রাখতে চান। বিচারবিভাগ যাতে কোনো নেতাকে দুর্নীতি বা অন্য কোনো অভিযোগে ক্ষমতাচ্যূত না করতে পারেন, সেটাও নিশ্চিত করতে চান।

নেতানিয়াহু যখন এই ঘোষণা করছেন, তখন লাখখানেক মানুষ পার্লামেন্টের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। সোমবার থেকে দেশজুড়ে ধর্মঘটও ডাকা হয়েছিল। তবে এই ঘোষণার পর ট্রেড ইউনিয়নগুলির কনফেডারেশন দ্রুত সেই ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয়।

এর আগে ফেডারেশন তাদের সাত লাখ সদস্যকে কাজ করা বন্ধ করার কথা বলেছিল। এই সব কর্মীরা স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, ব্যাঙ্কিং সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের কর্মী। এই ধর্মঘটের জের বিমান চলাচলেও পড়েছিল।

ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট নেতানিয়াহুর ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘এখন সময় হলো এই বিষয়টিকে নিয়ে খোলাখুলি ও যুক্তিগরাহ্য আলোচনা করার।’

সাবেক প্রধানমন্ত্রী লাপিদ বলেছেন, তারা এই ঘোষণাকে স্বাগত জানাচ্ছেন। তার দল আলোচনার জন্য প্রস্তুত। যদি সরকার ঠিকভাবে আলোচনা করে, তাহলে এই সংকট থেকে বের হয়ে আসা সম্ভব।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জানিয়েছেন, ‘আলোচনার সিদ্ধান্তের ফলে সমঝোতায় আসার জন্য আরো কিছুটা সময় পাওয়া গেল।’ যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। সূত্র: ডিডাব্লিউ, পার্সটুডে, এপি, রয়টার্স

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.