রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভারতের স্পষ্ট অবস্থান চায় জার্মানি

দুইদিনের সফরে শনিবার ভারতে যান জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস৷ নয়া দিল্লিতে তাকে অভ্যর্থনা জানান দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ তার সঙ্গে বৈঠক শেষে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধে ভারতকে পরিস্কার একটি অবস্থান গ্রহণের আহ্বান জানান৷

জার্মানির সংবাদমাধ্যম টাগেসশাউ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী শলৎস বলেন, গোটা বিশ্ব (রাশিয়ার) এই আগ্রাসনের কারণে ভুগছে৷ রাশিয়া এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক রীতিনীতি ভঙ্গ করেছে বলে উল্লেখ করেন জার্মান চ্যান্সেলর৷

এদিকে বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, রাশিয়াকে ‘একঘরে’ করতে ভারতের সহায়তা চেয়েছেন শলৎস৷ পশ্চিমা দেশগুলো প্রচেষ্টায় দিল্লি যাতে অন্তত কোন বাধা তৈরি না করে সেই নিশ্চিয়তা চেয়েছেন তিনি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশটির কাছে৷

জ্বালানি ও অস্ত্রের দিক থেকে ভারত রাশিয়ার উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল৷ এখন পর্যন্ত ইউক্রেনে হামলার বিষয়ে রাশিয়ার প্রতি কোনো নিন্দা জানায়নি তারা৷ বরং পশ্চিমাদের দেয়া নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে মস্কোর সঙ্গে বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছে নতুন দিল্লি৷ ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার সৈন্য প্রত্যাহারে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে গত বৃহস্পতিবারের ভোটাভুটি থেকেও বিরত থেকেছে তারা৷

শলৎসের সঙ্গে বৈঠকের পর মোদী বিবৃতিতে বলেছেন, আলোচনা ও কূটনীতির মাধ্যমেই ইউক্রেন সংকটের সমাধান চায় ভারত৷ যেকোন শান্তি আলোচনায় অবদান রাখতে তার দেশ প্রস্তুত বলেও জানান তিনি৷ শলৎসের সঙ্গে একমত প্রকাশ করে, বৈশ্বিক বাস্তবতায় বহুপাক্ষিক সংস্থাগুলোর উন্নতি প্রয়োজনের কথা তুলে ধরেন তিনি৷

ভারতের সংবাদ মাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, প্রতিরক্ষা খাতে সম্পর্ক জোরদারের বিষয়েও দুই দেশ একমত হয়েছে৷ নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা খাতে সহায়তা ভারত ও জার্মানির মধ্যে কৌশলগত সম্পর্কের শক্তিশালী একটি ভিত্তি হয়ে উঠতে পারে বলে উল্লেখ করেছেন মোদী৷ তিনি বলেন, ‘দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো নিয়ে আমরা ব্যাপক পরিসরে আলোচনা করেছি৷’

এদিকে সফরের দ্বিতীয় দিনে ভারতের সিলিকন ভ্যালি খ্যাত ব্যাঙ্গালুরুতে বিভিন্ন কোম্পানির কার্যক্রম পরিদর্শনে যান শলৎস৷ ভারতে প্রায় ১৮০০ জার্মান কোম্পানি সক্রিয় রয়েছে৷ শলৎস তার সফরে দুই দেশের অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো সম্প্রসারণের উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন৷ যে কারণে সফরে দেশটির ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধি দল তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন৷ এছাড়া শলৎসের সফরের এজেন্ডায় দুই দেশের মধ্যে দক্ষ জনশক্তি বিনিময়ের বিষয়টিও থাকছে৷ বর্তমানে জার্মানিতে দক্ষ কর্মীর সংকটে রয়েছে৷ অন্যদিকে বিপুল তরুণ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান নিশ্চিতে হিমশিম খাচ্ছে ভারত৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ, টাগেসশাউ, ডিপিএ, এপি

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.