‘জরুরী মুহুর্তে কাঁচামাল আমদানির এলসি খুলতে পারছে না ব্যাংক’

রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে গত বছর থেকে দেশে তীব্র আকারে ডলার সংকট দেখা দিয়েছে। আমদানি ব্যয় মেটাতে বাধ্য হয়ে রিজার্ভ থেকে খরচ করেছে সরকার। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংক জরুরীভাবে ঋণপত্র বা এলসি খুলতে পারছে না। এখনো কাঁচামাল আমদানির এলসি খুলতে অনেক সময় লাগে বলে জানিয়েছেন মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম।

শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এমসিসিআই আয়োজিত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় ও মুক্ত আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

এমসিসিআই সভাপতি বলেন, ব্যবসা- বাণিজ্য দেশের সমৃদ্ধি বয়ে আনে। করোনার মধ্যেও আমরা বেশ কয়েকটি সূচকে উন্নতি করেছি। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ইতিমধ্যে প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) ৩২ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে এই অর্থবছরে ৬০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি হবে। যে কোনো দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য কয়েকটি সূচক দরকার। একইসঙ্গে সুশাসনেরও দরকার রয়েছে। ২০২১ সালের করোনার মধ্যেও আমরা অনেক ভালো করেছিলাম। তখন প্রথম বিজনেস ক্লাইমেট ইনডেক্স চালু করেছিলাম।

তিনি বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য বিবিএক্স চালু করেছি। সেখানে অনেক তথ্য ইতিমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। বিবিএক্সে ১০টি স্তম্ভ তুলে আনা হয়েছে। এর মধ্যে ৭টিতে আমাদের উন্নতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি উন্নতি হয়েছে অবকাঠামো খাতে। আমদের দেশের অবকাঠামো খাতে অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া জানুয়ারিতে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিলো ৩২ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার। ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখে আকু বিল পরিশোধ করার পরেও এর পরিমাণ দাড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ রিজার্ভ ধীরে ধীরে ভালো অবস্থানে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, রেমিট্যান্স এবং রপ্তানি আয় কমায় ডলার সংকট বেড়েছে। ফলে রেমিট্যান্স বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। চলতি বছরের শুরুর মাস অর্থাৎ জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিলো ১ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার। আগের বছরের ডিসেম্বর প্রান্তিকে রপ্তানি আয়েও বেশ উন্নতি হয়েছে। গত মাসে রিজার্ভ থেকে বড় অঙ্কের আকু বিল পরিশোধ করেছি। এরপরেও ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত রিজার্ভের পরিমান দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার। যা এর আগের মাসের তুলনায় দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে।

তৈরি পোশাক নিয়ে এমসিসিআই সভাপতি বলেন, দেশের রপ্তানি খাতে রাজস্ব বাড়াচ্ছে তৈরি পোশাক খাত। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে পোশাক খাতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ দশমিক ৪০ শতাংশ। এছাড়া বর্তমানে দেশের পোশাক খাতে প্রতি মাসে ৪ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি হচ্ছে। তবে রপ্তানির ক্ষেত্রে শুধু তৈরি পোশাকের উপর নির্ভর করা উচিত না। আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে রপ্তানি বহুমুখীকরণ খুব গুরুত্বপূর্ণ।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.