‘অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে ডলার সাশ্রয়’

উপকরণ ও মেশিনারিজ আমদানি বন্ধ করলে ডলার সাশ্রয় হবে। কিন্তু তাতে দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, রপ্তানি কমে যাবে। তাই ডলার সাশ্রয় করতে গিয়ে ঢালাওভাবে আতঙ্কিত হয়ে কিছু করা যাবে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি বলেন, ডলার সাশ্রয় সবসময় ভালো ফল বয়ে আনে না, ঢালাওভাবে আতঙ্কিত হয়ে কিছু করাও যাবে না। আর ডলার ক্রাইসিস, ডলার ক্রাইসিস বলে আতঙ্ক ছড়াবেন না। এই সংকট পুরো পৃথিবীজুড়েই। ডলার সাশ্রয়ের জন্য অপ্রয়োজনীয় বিলাসবহুল পণ্য আমদানিকে নিরুৎসাহিত করতে কাস্টম ডিউটি বৃদ্ধি করা হয়েছে। ডিউটি বৃদ্ধি করা ছাড়া ডলার সাশ্রয়ে আমাদের তরফ থেকে কিছু করার নেই। আমরা আমদানি বন্ধ করতে পারবো না, ডিউটি বাড়িয়ে তাদের নিরুৎসাহিত করছি। তাছাড়া ডলার সাশ্রয়ে সবসময় ভালো ফল আসবে না।

তিনি বলেন, শুল্কহার কমানো-বাড়ানো এনবিআরের কাজ। যখন অন্য কোনো মন্ত্রণালয় থেকে আসে তখন তারা তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করে। আর এনবিআর যখন বিবেচনা করে তখন সার্বিক দিক বিবেচনা করে। শুল্কহার কমানো-বাড়ানোর সঙ্গে শুধু ডলার সাশ্রয়ের সম্পর্ক নয়। এর সঙ্গে উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হয় কি না, চোরাচালানের প্রবণতা বৃদ্ধি পায় কি না এসব বিষয়গুলোও আমাদের দেখতে হয়। এসব বিবেচনায় যেসব পণ্যের শুল্কহার বাড়ানো দরকার সেগুলো আমরা বাড়াই, প্রয়োজনে আরও বাড়াবো। অনেক জিনিস অপ্রয়োজনীয় মনে হতে পারে, কিন্তু দেখা যাবে সেগুলো আরেকটি পণ্যের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।

এছাড়াও তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের যে মন্দাভাব তার রেশ বাংলাদেশের বাণিজ্যেও পড়েছে। তাতে রাজস্ব আহরণও কমেছে। ভোক্তার সুবিধার্থে আমদানি পর্যায়ে কিছু অব্যাহতি দিয়েছি। তাতেও কিছুটা আহরণ কম হয়েছে। তবে আশাকরি বছর শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি যেতে পারবো।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, শুধু গ্যাসের দাম না, অন্যান্য সব ক্ষেত্রে সবাই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ হিসেবে দেখে ট্যাক্স, কাস্টম ডিউটি। যখনই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি হয়। সবাই মনে করে ট্যাক্স, ভ্যাট, কাস্টম ডিউটি কমালেই দ্রব্যমূল্য কমে যাবে। এছাড়া আয়কর আইন মন্ত্রিপরিষদে নীতিগত অনুমোদন পেয়েছে। প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে কাস্টমস আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রেও আমরা সব প্রক্রিয়া শেষ করেছিলাম। এক পর্যায়ে সংশোধনের জন্যও আমাদের কাছে আসে। সেগুলো সম্পন্ন করে মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিয়ে ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে দিয়েছিলাম। এখন এটা আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। আমরা আইন মন্ত্রণালয়কে তাগিদ দিয়ে যাচ্ছি।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.