হাইকোর্টে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির ক্ষমা প্রার্থনা

চিকিৎসক নিয়োগ

কারাগারের হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক নিয়োগের বিষয়ে আদালতের আদেশ প্রতিপালন না করায় হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

গত ১৭ জানুয়ারি দেশের কারাগারের হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক নিয়োগের বিষয়ে আদালতের আদেশ প্রতিপালন না করায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে (ডিজি) তলব করেন হাইকোর্ট। ২৪ জানুয়ারি ডিজিকে আদালতে উপস্থিত হতে বলা হয়। একাধিকবার সময় নিয়েও কারাগারের শূন্য পদে ৪৮ জন চিকিৎসক নিয়োগ দেননি তিনি। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তলব করা হয়। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট জে আর খান রবিন।

গত মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন জে আর খান রবিন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। আদালতে কারা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম।

কারাগারের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকের শূন্য পদ পূরণের দাবিতে আইনজীবী জে আর খান রবিন হাইকোর্টে রিট করেন ২০১৯ সালে। পরে ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ২৩ জুন এক আদেশে হাইকোর্ট সারাদেশের সব কারাগারে বন্দিদের ধারণক্ষমতা, বন্দি ও চিকিৎসকের সংখ্যা এবং চিকিৎসকের শূন্য পদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ দিয়ে রুল জারি করেন।

ওই নির্দেশ অনুসারে ২০১৯ সালের নভেম্বরে আদালতে কারা মহাপরিদর্শকের (আইজি প্রিজন) পক্ষ থেকে দেওয়া প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল, দেশের ৬৮টি কারাগারে ১৪১টি পদের বিপরীতে মাত্র চিকিৎসক রয়েছেন ১০ জন। ওই প্রতিবেদন দেখে হাইকোর্ট কারাগারগুলোতে চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে ২০২১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনে জানানো হয়, দেশের ৬৮টি কারাগারে ১৪১টি পদের মধ্যে ১১২ জন চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

আইনজীবী জে আর খান রবিন জানান, সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ১৪১টি কারা চিকিৎসকের শূন্য পদে চিকিৎসক আছেন মাত্র চারজন। যে কারণে শূন্য পদগুলোতে চিকিৎসক নিয়োগে আদালতের আগের আদেশ বাস্তবায়নের অবস্থা জানানোর নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করি।

গত বছরের ১৫ নভেম্বর আদালত আগের আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলেছেন। আর এ বিষয়ে কারা মহাপরিদর্শক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিবকে প্রতিবেদন দিতে (মৌখিক) আদেশ দেন। ওই আদেশ অনুসারে গত ১৩ ডিসেম্বর কারা মহাপরিদর্শক একটি প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের ৬৮টি কারাগার ও একটি ২০০ শয্যার কারা হাসপাতালে বিভিন্ন স্তরের মোট ১৪১ চিকিৎসকের অনুমোদিত পদ রয়েছে। কারা হাসপাতালে ১৪১টি চিকিৎসক পদের বিপরীতে প্রেষণে ও সংযুক্ত মিলিয়ে মোট ৯৩ জন চিকিৎসক রয়েছেন। পরে আদালত বাকি ৩৮টি শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগের আদেশ ৭ জানুয়ারির মধ্যে বাস্তবায়নের আদেশ দেন। কিন্তু সেটা বাস্তবায়ন না করায় আজ ডিজিকে তলব করা হয়।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.