জামায়াত ছাড়া বিএনপির টিকে থাকা দুষ্কর: ওবায়দুল কাদের

জামায়াত ছাড়া বিএনপির টিকে থাকা দুষ্কর বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, নেতিবাচক রাজনীতি করতে করতে বিএনপি যেখানে গিয়ে পৌঁছেছে, এখন তাদের বড় সমাবেশ, বড় মিছিল করতে হলে জামায়াতকে দরকার। জামায়াত ছাড়া তাদের (বিএনপি) টিকে থাকাই দুষ্কর। জামায়াতের কর্মী-সমর্থক ব্যাংক আছে। কাজেই সমাবেশ বড় করতে হলে, মিছিলে লোক বেশি আনতে হলে জামায়াত ছাড়া তাদের চলবে না। সাম্প্রদায়িক শক্তির পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে বিএনপি। জঙ্গিবাদী শক্তি, সাম্প্রদায়িক শক্তির বিশ্বস্ত ঠিকানা বিএনপি। বিএনপি আর জামায়াত একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। একটাকে ছাড়া আরেকটা চলবে না।

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপির সমাবেশ ও মিছিল কর্মসূচি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা কর্মসূচি দিতে পারে, তাদের দফা আছে। ১০ দফা, আবার বলে ১ দফা। দেখলাম ২৩ দল, আবার হলো ৫৪ দল। তাদের জগাখিচুড়ি ঐক্যের পরিণতি আমরা গত নির্বাচনে দেখেছি। অতি বাম, অতি ডান, সব মিলে মিশে একাকার। বিএনপির আন্দোলনে জনগণের জানমাল রক্ষায় আওয়ামী লীগ আগের মতোই সতর্ক অবস্থানে থাকবে। আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ ও শান্তি শোভাযাত্রা করবে। আমরা রাজপথে আছি, রাজপথ ছাড়ব না।

তিনি বলেন, গতকাল সমাবেশ দেখলাম। সমাবেশ অবশ্যই বড় হয়েছে, অস্বীকার করে লাভ নেই। আমাদের দুটি মিটিং অনেক বড় হয়েছে। মিরপুরে আমাদের বিরাট সমাবেশ হয়েছে, আলোচনা সভা একটি বড় সমাবেশে রূপ নিয়েছে। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতেও তাই। কিন্তু তাদের এই যে এত জোট, প্রেসক্লাবের সমানে, বিজয়নগর…দেখলাম ফুটপাতে বসে আছে। প্রেসক্লাবের সামনে দেখলাম কয়েকটা চেয়ার, সামনে তার চেয়ে সাংবাদিক বেশি। মঞ্চে আছে কিছু নেতা। ১টা পর্যন্ত ৩ দল আছে, ৪ দল আসেনি। ৭ দলের এই অবস্থা। বিজয়নগরে ১২টি দল…সব মিলিয়ে ২৪ জন হবে বোধ হয়, ১টার সময় দেখেছি। এটা জগাখিচুড়ি ঐক্য এবং অর্থহীন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই ঐক্য কতখানি টেকসই সেটা সময় বলে দেবে। গতবারও তাদের ২১ দল ছিল। পরে দেখা গেল, নির্বাচনের সময় সব এদিক-সেদিক হয়ে গেল। ঐক্যের চেহারাও দেখলাম না। রাজনৈতিকভাবে আমাদের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরবর্তী নেতা। পরবর্তী নির্বাচনেও আমাদের নেতৃত্ব আছে। তাদের কে? তারা কখনো বলে বেগম জিয়া, কখনো বলে তারেক রহমান কিন্তু এ দুজনের কারোই তো নির্বাচন করার যোগ্যতা নেই। তারা দুজনই সাজাপ্রাপ্ত। গতবার তো কামাল হোসেন ছিলেন!’

আওয়ামী লীগ রাজপথে আছে মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘আমরা রাজপথ ছাড়বো না। রাষ্ট্র ক্ষমতায় আমরা আছি। দেশের জনগণের যানমাল রক্ষার দায়িত্ব আমাদের। আমরা সতর্ক অবস্থানে থাকবো। আমরা শান্তি সমাবেশ, শান্তির শোভাযাত্রা করবো। তারা শোভাযাত্রা করলে আমরা শান্তির শোভাযাত্রা করবো। আমরা বিক্ষোভ মিছিল করবো, সরকারি দল-এটা হতে পারে না। আমাদের বিক্ষোভের কোনো কারণ নেই।’

জামায়াত নিষিদ্ধের জন্য আওয়ামী লীগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছিল। সেখান থেকে সরে আসার কারণ কী জানতে চাই তিনি বলেন, ‘যেহেতু এটা গণসমঝোতা না, বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। সেহেতু ভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া যুক্তিসঙ্গত নয়।’

আগামী ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে আপনার নাম শোনা যাচ্ছে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কী-গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমার ওই পদের যোগ্যতা নেই। আমাদের সভাপতি নিশ্চয়ই আলাপ-আলোচনা করছেন, খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। তার মাথায় কারো নাম থাকতেও পারে। সেটা তিনি এখনো বলেননি।’

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.