ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ২১ আইনজীবীকে হাইকোর্টে তলব

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের বিরুদ্ধে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দিয়ে বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করাসহ বিচারকাজ বিঘ্নিত করার অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির সম্পাদক মো. মফিজুর রহমান বাবুলসহ ২১ জন আইনজীবীকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। আগামী ২৩ জানুয়ারি তাদেরকে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ২১ আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন আদালত।

তলব করা অপর ২০ আইনজীবী হলেন- অ্যাডভোকেট মিনহাজুল ইসলাম, এমদাদুল হক হাদি, নিজামুদ্দিন খান রানা, আনিছুর রহমান মঞ্জু, মো. জুম্মন চৌধুরী, রাশেদ মিয়া হাজারী, জাহের আলী, মো. আ. আজিজ খান, দেওয়ান ইফতেখার রেজা রাসেল, মো. ছদর উদ্দিন, মাহমুদুর রহমান রনি, মো. মাহবুবুর রহমান, মো. আরিফুল হক মাসুদ, মীর মোহাম্মদ রাইসুল আহম্মেদ, মহিবুর রহমান, মো. জাকারিয়া আহমেদ, মো. মোবারক উল্লা, মো. ফারুক আহমেদ, সফিক আহমেদ, ইকবাল।

জেলা জজ আদালতে এজলাস চলাকালীন সময়ে বিচারকের নামে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দিয়ে বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করাসহ বিচার বিঘ্নিত করা এবং মানহানি করার বিরুদ্ধে প্রতিকার প্রার্থনা করে প্রধান বিচারপতির কাছে গত ৯ জানুয়ারি আবেদন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা জজ বেগম শারমিন নিগার।

জেলা জজ বেগম শারমিন নিগার আবেদনপত্রে উল্লেখ করেছেন যে, গত ২ জানুয়ারি এজলাস চলাকালীন সময়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিচারক মোহাম্মদ ফারুককে অশালীন ও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এজলাস থেকে নামতে বাধ্য করার প্রতিক্রিয়ায় সুপ্রিম কোর্টের কনটেম্পট ব্যাচ রুল জারি করায় তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৫ জানুয়ারি এবং ৮ জানুয়ারি এজলাস চলাকালীন কতিপয় আইনজীবী বিচারকের বিরুদ্ধে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ স্লোগান প্রদান করেন। জেলা জজের এই আবেদনপত্র প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টে পাঠিয়ে দেন।

এর আগে গত ৫ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুককে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও অশালীন আচরণের ঘটনায় ব্রাক্ষণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ ভূঞা, সম্পাদক (প্রশাসন) অ্যাডভোকেট মো. আক্কাস আলী ও অ্যাডভোকেট জুবায়ের ইসলামকে তলব করেন হাইকোর্ট।

আগামী ১৭ জানুয়ারি আদালতে হাজির হয়ে তাদের ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার দায়ে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।

গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন। এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও অশালীন আচরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে পাঠানো হয়। প্রধান বিচারপতির নির্দেশে রেজিস্ট্রার জেনারেল বিচারকের অভিযোগ বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠানো হয়।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.